নিজ বাড়ির নির্মাণ শ্রমিকের হাতে টাকার জন্য খুন হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক সাইদা খালেক। এই ঘটনায় আটক আনোয়ারুল পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছেন। গাইবান্ধা থেকে শুক্রবার সকালে আটক হন আনোয়ারুল।
তিনি বলেছেন, দৈনিক মজুরি দেয়ার সময় সাইদার কাছে অনেক টাকা ছিল। তা দেখে লোভ সামলাতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে অধ্যাপকের ওড়না দিয়েই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। মরদেহ ঝোঁপে ফেলে পালিয়ে যান তিনি।
আটকের পর তার দেয়া তথ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর ইউনিয়নের পানিশাইল এলাকার একটি আবাসন প্রকল্প থেকে শুক্রবার দুপুরে অধ্যাপকের মরদেহ উদ্ধার হয়।
গাজীপুরের কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপঙ্কর রায় শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে এসব নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক প্রতিদিন তার বাড়ির নির্মাণকাজ দেখতে ওই প্রকল্পে যেতেন। ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যার আগে সব শ্রমিক চলে গেলেও আনোয়ারুলকে কয়েকটি গাছ কাটার জন্য রেখে দিয়েছিলেন তিনি।
‘কাজ শেষে পারিশ্রমিক দেয়ার সময় অধ্যাপকের কাছে অনেক টাকা দেখতে পেয়ে লোভ সামলাতে পারেননি আনোয়ারুল। নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে ৪০০ গজ দূরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে টাকাগুলো নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।’
গাইবান্ধা থেকে আটক হন নির্মাণ শ্রমিক আনোয়ারুল। ছবি: নিউজবাংলা
নিহত সাইদা খালেকের বয়স ৭১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যান ২০১৬ সাল। গত ১১ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
এর দুদিন পর ১৩ জানুয়ারি নিহতের মেয়ে সাদিয়া কাশিমপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তদন্তে নামে পুলিশ। শুক্রবার সকালে গাইবান্ধা থেকে আটক করা হয় আনোয়ারুলকে।
এই আবসন প্রকল্প থেকে উদ্ধার হয় মরদেহ। ছবি: নিউজবাংলা
অধ্যাপক সাইদা ভাড়া থাকতেন গাজীপুরের পানিশাইল এলাকার কাশিমপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায়।
নিউজবাংলাকে ওই বাড়ির মালিক মোশারফ হোসেন মৃধা বলেন, ‘ছেলে ও তার স্ত্রীকে নিয়ে ৮-৯ মাস আগে আমার বাড়ির দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। ওনার এক ছেলে ও তিন মেয়ে। ছেলে ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের ম্যানেজার। দুই মেয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। আরেক মেয়ে ঢাকায় থাকেন। ম্যাডাম ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। একটা বিদেশি কুকুর পুষতেন। মাঝেমধ্যে তার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী আসতেন।’
এই বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন অধ্যাপক সাইদা। ছবি: নিউজবাংলা
পানিশাইল এলাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক প্রকল্পের সিকিউরিটি ইনচার্জ জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘বাড়ির কাজ দেখাশোনার জন্য প্রকল্পের পাশে বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি।’
এসআই দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামিকে শনিবার সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে।’