ঢাকার সাভারে গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী মাছের আড়তের কারণে প্রতিনিয়ত যানজট ও ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কের ওপর রাখা মাছবাহী যান ও ক্রেতাসমাগমের কারণে কারখানাগামী শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ পড়ে চরম বিপাকে।
মাছ বাজার পরিচালনাকারীরা যানজটের কথা স্বীকার করেছেন। সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব একে অন্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ।
প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় আশুলিয়া থানা মৎস্য আড়ত মালিক সমিতি নামে মাছ বাজার ঘিরে এই বিশৃঙ্খলা চোখে পড়ে।
নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে। ঢাকা, আব্দুল্লাহপুর ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যস্ততম ত্রিমোড় হচ্ছে বাইপাইল। কিন্তু প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বাইপাইল ত্রিমোড়ের যানজটে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হচ্ছে যানবাহনকে।
মোড় থেকে একটু সামনে মহাসড়কের পাশে একটা মাছ বাজারের কারণে প্রতিনিয়ত যানজট হচ্ছে। মাছের ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ব্যাটারিচালিত ভ্যানসহ অসংখ্য মানুষের আনাগোনা বাজার ছেড়ে সড়কের ওপর চলে আসে।
বাইপাইল থেকে বিশমাইলের উদ্দেশে রওনা হওয়া পোশাক শ্রমিক লাইলি আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল ৮টার ভেতর আমার গার্মেন্টসে যাইতে হয়। সেই হিসাবে ভোর ৭টার দিকে বাসা থাইকা বের হই। কিন্তু গত কয়দিন ধইরা বাইপাইলে জ্যামের কারণে গার্মেন্টসে যাইতে দেরি হইতেছে। সব মাছের গাড়ি রাস্তায় দাঁড় করায় রাইখা মাছ নামায়। রাস্তার তিন ভাগের দুই ভাগই আটকায় রাখে ওরা।’
যানজটের বিষয় স্বীকার করে আশুলিয়া থানা মৎস্য আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. বাদশা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করে আমাদের আগের জায়গাটা একোয়ার হয়ে যাওয়ায় অস্থায়ীভাবে এখানে বাজার চলছে। আমরা খুব কষ্টে আছি। আমাদের তো বিশাল জায়গার দরকার। তবে এই বাজারের পেছনে একটা জায়গায় বালু ভরাট করতেছি। ৮-১০ দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
সাভার ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ আব্দুস সালাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূলত সকালের দিকে মাছের আড়তের লোকজন এটা করেন। ওই সময় সেখানে আমাদের একজন ট্রাফিক পুলিশ থাকেন। কিন্তু তার একার পক্ষে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা সামলানো সম্ভব না।
‘আর আমাদের পক্ষেও সেখানে একটি স্পেশাল টিম দেয়া সম্ভব না। তবে হাইওয়ে থানা পুলিশ চাইলে বিষয়টি সমাধান করতে পারে৷ তাদের সকালের টিম সেখানে গিয়ে দুই-এক ঘণ্টা সময় দিলেই এই সমস্যা নিরসন সম্ভব।’
সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে ওই আড়তের সামনে কয়েকবারে কয়েকটি গাড়ি রেকার করিয়েছি। আসলে সেখানে রেকার ওভাবে রাখা সম্ভব হয় না। তবুও আমরা সকালে চেষ্টা করি রাস্তা ফ্রি রাখার।
‘আবার একটা বিষয় হলো, একটি গাড়ি যদি আজ রেকার করে জরিমানা করা হয়। সেই গাড়ি আর আসে না। নতুন করে আরেকটি গাড়ি আসে৷ তাই শক্ত ব্যবস্থা নেয়া যায় না৷ তবে ট্রাফিক পুলিশ চাইলে বিষয়টি সমাধান করতে পারে। তাদের নাকের ডগায় সকালে এসব ঘটনা ঘটে।’