বরগুনায় বাস শ্রমিক ও ইজিবাইকচালকদের মধ্যে সংঘর্ষের পর আন্তজেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বরগুনা-নিয়ামতি সড়কে শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। এ সময় সড়কের বিভিন্ন স্থানে বাস ও ইজিবাইক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
দুই পক্ষের দাবি অনুযায়ী, সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
সংঘর্ষের পর দুপুর ১২টা থেকে আন্তজেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
বরগুনার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিউজবাংলাকে জেলা বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সগীর হোসেন বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশে বরগুনার মহাসড়কে সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত তিন চাকার যান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। কিন্ত নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মহাসড়কে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা, মাহেন্দ্রসহ তিন চাকার যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ হয়নি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব বিষয় নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে বরগুনা-নিয়ামতি সড়কের বাস শ্রমিক ও ইজিবাইকচালকরা তর্কে জড়ান।
একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। এ সময় সড়কের বিভিন্ন স্থানে একাধিক বাস ও ইজিবাইক ভাঙচুর করা হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আন্তজেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন বাস মালিকরা।
বরগুনা জেলা বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কবির বলেন, ‘সকালে মহাসড়কে অবৈধ ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও মাহেন্দ্র চলাচল না করার জন্য তাদের অনুরোধ করি। আমাদের অনুরোধ না শুনে তারা বরগুনা-নিয়ামতি সড়কের বিভিন্ন স্থানে আমাদের পাঁচটি বাস ভাঙচুর করে। আমাদের চালকসহ ১৫ জন শ্রমিককে আহত করে।
‘আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। অন্যথায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।’
নিউজবাংলাকে বরগুনা-নিয়ামতি সড়কের বদরখালী, ফুলঝুরি ও গৌরীচন্না ইউনিয়ন ইজিবাইকচালক-মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি বজলুর রহমান বশির বলেন, ‘আমাদের অন্তত ১০ জন চালক আহত হয়েছেন। যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে অনেকগুলো অটোরিকশায় হামলা করেছে। তার পরও আমাদের অটো চলাচল করছে।
‘নিষেধাজ্ঞার পর আমরা মহাসড়কে খুব একটা উঠি না। তবে যাত্রীদের সুবিধার জন্য মহাসড়কের সংযোগ সড়ক থেকে অনেক সময় মহাসড়কে উঠতে হয়। এ নিয়ে বাস মালিক-শ্রমিকদের এতটা বাড়াবাড়ি করার দরকার ছিল না।’
বরগুনা জেলা বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সগীর হোসেন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরেই মহাসড়কে অবৈধ ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও মাহেন্দ্র চলাচল নিষেধের জন্য জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করে আসছি।
‘তাদের কারণে আমাদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসায় ধস নেমে পথে বসার উপক্রম। প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা এদের ঠেকানোর পথ অবলম্বন করছি। তবে শ্রমিকদের বলা হয়েছে যাতে আইন ভঙ্গ না হয়।’
বরগুনার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম জানান, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি সুরাহার জন্য উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা চলছে।
‘যারা আইন হাতে তুলে নিয়েছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। শিগগিরই সবকিছু স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে শিগগিরই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেব।’