বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেলার উদ্দীপনা হারাল আর্তনাদে

  •    
  • ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০১:৫১

শনিবার মেলা বসবে বলে যে গ্রাম ছিল আনন্দমুখর মুহূর্তেই সেই পরিবেশ বদলে গেছে। সেখানে নেমে এসেছে বিষাদ। বেলুনের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে এক শিশুর অবস্থা গুরুতর। উন্নত চিকিৎসার জন্য দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাহারি সব বেলুনের টুকরো। তাতে ছোপ ছোপ রক্ত। ভেঙে পড়েছে টিনের সব বেড়া। ঘটনাস্থল ঘিরে আছে পুলিশ, আছে গ্রামের লোকজন। তাদের চোখেমুখে আতঙ্ক।

বেলুনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বিরুলিয়া গ্রামে চোখে পড়ে এমন দৃশ্য। শনিবার মেলা বসবে বলে যে গ্রাম ছিল আনন্দমুখর মুহূর্তেই সেই পরিবেশ বদলে গেছে। সেখানে নেমে এসেছে বিষাদ। বৃহস্পতিবার বিকেলের দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়েছে শিশুসহ ৪১ গ্রামবাসী।

স্থানীয়রা জানান, বিরুলিয়া গ্রামে প্রতি পৌষ মাসেই বসে ঠান্ডাকালি মেলা, যা চলছে প্রায় দুইশ বছর ধরে। গ্রামের লোকজন এই মেলার জন্য অপেক্ষা করে সারা বছর।

মেলায় বিক্রির জন্য এ দিন বেশ আয়োজন করে বেলুন ফোলাতে শুরু করেন আনোয়ার হোসেন। তার এই কাজ দেখতে ভিড় করে শিশুরা। তাদের হৈ চৈ দেখে বড়দের অনেকেই সেখানে জড়ো হন। সে সময় হঠাৎ বিস্ফোরিত হয় গ্যাস সিলিন্ডার।

বিরুলিয়া গ্রামের সুমি আক্তার বলেন, ‘বিকেল ৫টার সময় আৎকা (হঠাৎ) একটা আওয়াজ অয়। আমি ঘর থাইক্কা দৌড় দেই। আনোয়ার মিয়ার বাড়ির উডানে গিয়া দেখছি ৩৫-৪০ জন উডানো পইরা রইছে। সবার আতো (হাতে)-পায়ে শুধু রক্ত৷ এরপর চাইয়া দেহি আমার পোলা-মাইয়া দুনোডা মাডিত চিল্লাইতেছে। আমি পোলা-মাইয়াডা দুনোডারে কোলে কইরা হাসপাতালের দিকে লইয়া যাই।’

সুমির সঙ্গে কথা হয় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তার ১০ বছরের মেয়ে নিশু ও ৯ বছরের ছেলে সম্রাটকে।

ওই হাসপাতালেই পাওয়া গেছে বেলুন বিক্রেতা আনোয়ারের বোন ফারহানা বেগমকে। তিনি এসেছেন দগ্ধ ভাইকে দেখতে।

ফারহানা জানান, বিকট শব্দ শুনে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন তার ভাইয়ের সিলিন্ডারটি ছিটকে অন্য একটি বাড়িতে গিয়ে পড়েছে। তাদের বাড়ির সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় অনেকে পড়ে আছে। অনেকটা অচেতন অবস্থায় খুঁজে পান আনোয়ারকে। তার পাশে কাতরাচ্ছে আনোয়ারের ৬ বছরের মেয়ে মরিয়ম ও ১০ বছরের ছেলে আফনান। তাদেরও কুমিল্লা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেবদাস দেব বলেন, ‘বিস্ফোরণে আহত ৪১ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। বেশিরভাগই ছিল ৫ থেকে ১৫ বছরের শিশু। এর মধ্যে ৩ জনকে রেখে অন্যদের কুমিল্লা মেডিক্যালে পাঠিয়েছি।’

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, ‘পুলিশ সেখানে গিয়েছে। বেলুন ফোলানোর জন্য ব্যবহার করা গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।’

কুমিল্লা মেডিক্যালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান মির্জা মো. তাইয়েবুল ইসলাম বলেন, ‘একটি শিশুর অবস্থা গুরুতর। তার অপারেশন করা হবে।

‘আশঙ্কাজনক ২ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখানে দগ্ধদের মধ্য কারো অবস্থাই ভালো না।’

আহতদের দেখতে রাতে কুমিল্লা মেডিক্যালে যান সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন। তিনি জানান, সবাইকে যথাযত চিকিৎসা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর