বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুড়ে মারা যাওয়া নারীর ঘরে সাপ নিয়ে হুলুস্থুল

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৩ জানুয়ারি, ২০২২ ২২:৩২

পুড়ে যাওয়া ওই ঘর ঘিরে এখন দেখা যায় উৎসুক জনতাদের। কারণ ওই ঘরে দুধ-কলা দিয়ে পুষে রাখা হয়েছে একটি সাপকে; এটিকে ঘিরে জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে মোমবাতি-আগরবাতি। এলাকায় রটানো হয়েছে, ওই সাপে ভর করে ফিরে এসেছে রেজিয়ার আত্মা।

চট্টগ্রাম মহানগরীর আকবর শাহ থানার বিশ্বকলোনিতে গত ১৯ ডিসেম্বর আগুনে পুড়ে যায় পাঁচটি বসতঘর। তাতে পুড়ে মারা যান রেজিয়া বেগম নামে এক বৃদ্ধা।

কলোনির বি-ব্লক ভান্ডারীতে রেজিয়ার ঘর ছিল। আগুন নেভানোর পর পুড়ে যাওয়া ঘরের খাটের নিচ থেকে রেজিয়ার মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

রেজিয়ার ওই ঘর ঘিরে এখন দেখা যায় উৎসুক জনতাদের। কারণ ওই ঘরে দুধ-কলা দিয়ে পুষে রাখা হয়েছে একটি সাপকে; এটিকে ঘিরে জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে মোমবাতি-আগরবাতি। এলাকায় রটানো হয়েছে, ওই সাপে ভর করে ফিরে এসেছে রেজিয়ার আত্মা।

যেদিন আগুন লাগে তার পরদিন ওই ঘরে সাপটিকে দেখা যায় বলে জানান প্রতিবেশীরা।

কলোনির বাসিন্দা এমরান হোসেন বলেন, ‘রেজিয়া আক্তারের মৃত্যুর পরদিন তার বসবাসের ঘরে সাপটি প্রথম দেখতে পান প্রতিবেশী নেজাম উদ্দিন। অনেকক্ষণ সাপটি ঘরে থাকায় তিনি দুধ-কলা খেতে দেন। সেই থেকেই ওই সাপ ঘরটিতে দুধ-কলা খেয়ে বেঁচে আছে।’

সরেজমিন বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বকলোনির ওই ব্লকে দেখা যায়, খোলা জায়গায় ছোট একটি ঘর বানিয়ে সাপটিকে রাখা হয়েছে। ঘরে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে ছোট ছোট বেলি ফুল। ঘরের সামনে জ্বলছে মোমবাতি ও আগরবাতি। সেটি ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে উৎসুক কয়েকজন।

রেজিয়ার প্রতিবেশী নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘মৃত রেজিয়া মাইজভান্ডার দরবার শরিফের ভক্ত ও পির-কামেল টাইপের মানুষ ছিলেন। আমিও দরবার শরিফের ভক্ত। সাপটি যেহেতু কোথাও যাচ্ছে না, হয়তো আল্লাহর উছিলায় উনি এভাবে ফিরে এসেছেন। তাই একে যত্ন করে লালন করা হচ্ছে।’

কলোনি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে আকবর শাহ শাপলা আবাসিক এলাকায় থাকেন রেজিয়ার মেয়ে পিংকি আক্তার।

তিনি বলেন, ‘সাপটি আমিও দেখতে গিয়েছি। আমার মা হঠাৎ করে মারা গেল। এরপর এ ঘটনা। আল্লাহর কোনো কুদরতিও হতে পারে।’

এটা কী সাপ জানতে চাইলে নেজাম জানান, কয়েকজন বেদে এসে বলেছেন এটা জলডোরা সাপ।

জীববৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া জানান, জলডোরা সাপ সাধারণত বিষহীন। এটি পুকুরে থাকে। শীতকালে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে মাঝেমধ্যে ডাঙায় উঠে আসে। আগুনে পোড়া ঘরে উষ্ণতা পেয়ে হয়তো সাপটি সেখানে থেকে যায়।

ওই সাপে রেজিয়ার আত্মা ভর করেছে- এমন খবর রটে যাওয়ায় এলাকার লোকজন প্রতিদিনই সেখানে ভিড় করছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ওই ব্লকের বাসিন্দারা।

বি-ব্লক এলাকার মোমেনুর রহমান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে চলছে এ ঘটনা। এখন ফুল, আগরবাতি ও মোমবাতি দিয়ে সাপটিকে পূজা দেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে দেখা যাবে মাজার তৈরি করে ফেলেছে। এখন অপেক্ষায় আছি এটা কতটুকু পর্যন্ত গড়ায়।’

মোমেনুরসহ কলোনির কয়েক বাসিন্দা জানান, বিশ্বকলোনিতে সহস্রাধিক ঘর আছে। বেশির ভাগই কাঁচা এবং রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা। তার মধ্যে ওই দিন আগুনে পাঁচটি ঘর পুড়েছে।

এ জায়গায় স্থায়ীভাবে দখলে রাখতেই কয়েকজন এই সাপে আত্মা ভর করার গল্প রটিয়েছেন।

এ ঘটনাটি শুনেছেন বলে জানান আকবর শাহ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আমিন। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, এটি কিছু মানুষের অন্ধবিশ্বাস। এ কারণে ঘটনাটি প্রশাসন এখনও আমলে নেয়নি। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর