টিএসসির কাওয়ালি আসরে হামলার প্রতিবাদে ফের সেখানে কাওয়ালির আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাওয়ালি ব্যান্ড ‘সিলসিলা’।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে তাদের কাওয়ালি গান পরিবেশনা শুরু হয়।
গতকালের কাওয়ালি আসরে জনপ্রিয় অনেক কাওয়ালকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও আজ শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড সিলসিলাই গান পরিবেশন করছে।
আজকের আসরে কাওয়ালি ছাড়াও র্যাপ ও বিভিন্ন গান গাওয়া হচ্ছে।
আয়োজকদের অন্যতম সিলসিলার ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা লুৎফুর রহমান বলেন, ‘গতকাল আমাদের আসরে হামলা চালানো হয়েছে। হামলা চালিয়ে আমাদের আয়োজন থামানো যাবে না। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা ফের আয়োজন করেছি।’
আয়োজকদের অন্যতম সালেহ উদ্দীন সিফাত বলেন, ‘আমাদের এখানে বিভিন্ন আধুনিক গানও গাওয়া হবে। আমরা বিশ্বাস করি সংস্কৃতির কোনো বাউন্ডারি নেই। সংস্কৃতির কোনো ম্যাপ থাকতে পারে না। যারা সংস্কৃতিকে রুখে দিতে চায়, গান-সুরকে রুখে দিতে চায়, তারা সাংস্কৃতিক দস্যু। তাদের আমরা সংস্কৃতির মাধ্যমেই প্রতিহত করব।’
এর আগে বুধবার ঢাবি ক্যাম্পাসে আয়োজন করা কাওয়ালি আসরে হামলার প্রতিবাদে পরদিন একই স্থানে ফের কাওয়ালি এবং প্রতিবাদী গান গাওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাওয়ালি ব্যান্ড সিলসিলা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে তাদের গান পরিবেশন করার কথা রয়েছে।
টিএসসিতে কাওয়ালি আসরে হামলার প্রতিবাদে সেদিন রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে বামপন্থি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা হামলায় ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করে জড়িতদের বিচার দাবিতে স্লোগান দেন।
টিএসসির পায়রা চত্বরে আয়োজিত কাওয়ালি আসরে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় মঞ্চ ভাঙচুর করে একদল ছাত্র। পণ্ড হয়ে যায় অনুষ্ঠান। হামলায় অনুষ্ঠানে আসা শ্রোতা-দর্শক, আয়োজক, সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।
হামলার পর রাতে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এলে তার পদত্যাগ দাবিতেও স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তিনি নিজ কার্যালয়ে ফিরে যান। পরে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে তার পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় প্রক্টর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম তোমাদের বক্তব্য শোনার জন্য। কিন্তু তোমরা বক্তব্য না শুনেই আমি যা করিনি তা যুক্ত করে স্লোগান দিচ্ছ। এখন আবার বিচারের দাবিতে আমার কাছে এসেছ। তোমাদের কাছ থেকে এ রকম ডাবল স্ট্যান্ডার্ড আশা করিনি।’
পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
রাত ৮টার দিকে কাওয়ালি আসরের আয়োজকরা এসে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে প্রক্টর অফিসের সামনেই কাওয়ালি গান পরিবেশন করেন।
হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাওয়ালি ব্যান্ড ‘সিলসিলা’র লুৎফুর রহমান এখন থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার টিএসসিতে কাওয়ালি গান গাওয়ার ঘোষণা দেন।