প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের তোলা টাকা খরচ না করায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি আমান কটন ফেব্রিকসের পরিচালকদেরকে তিন কোটি টাকা করে জারিমানা করা হয়েছে। কোম্পানির ৭৩ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের লিয়েনও বাতিল করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশ পালন করে আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করার নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আমান কটন ফেব্রিক্সের পরিচালনা পর্ষদে আছেন ছয়জন। এরমধ্যে একজন চেয়ারম্যান, একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দুইজন পরিচালক, একজন মনোনীত পরিচালক ও একজন স্বাধীন পরিচালক। এদের মধ্যে স্বাধীন পরিচালককে জরিমানার টাকা দিতে হবে না।
কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের নিরীক্ষক এটিএ খান অ্যান্ড কো.কেও সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কমিশনের ৮০৭ তম সভায় এই সিদ্ধান্ত হয় বলে এতে জানানো হয়েছে। জরিমানার প্রসঙ্গে এতে বলা হয়, কোম্পানিটি প্রাথমিক গণ প্রস্তাব বা আইপিও থেকে উত্তোলন করা টাকা যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করেনি। কোম্পানিটির বর্তমানে কী অবস্থায় আছ তার সঠিক চিত্র উপস্থাপনসহ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রদানেও ব্যর্থ হয়েছে।
কোম্পানিটির বিশেষ নিরীক্ষা করার জন্য যে অডিটর নিয়োগ দেয়া হয়েছিল, তাদেরকেও সহযোগিতা করেনি। তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ কোনো উপযুক্ত দলিল ছাড়াই সহযোগী প্রতিষ্ঠানে লেনদেন করেছে।
২০১৮ সালের জুলাইয়ে পুঁজিবাজারে শেয়ার ছেড়ে ৮০ কোটি টাকা তোলে আমান কটন। বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪০ টাকা করে আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৬ টাকা করে শেয়ার বিক্রি করেছে।
কোম্পানির গত ১৫ ডিসেম্বর বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসইতে পাঠানো একটি চিঠিতে আইপিও থেকে উত্তোলন করা টাকা ব্যবহারে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়েছিল।
যেখানে কোম্পানিটির মেশিনারিজের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬৬ কোটি ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ৫ কোটি ৩৯ লাখ ৩৪ হাজার ৩৬৫ টাকা এবং আইপিও প্রক্রিয়ার জন্য রাখা ছিল ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এছাড়া ভূমি উন্নয়নের জন্য আইপিও থেকে উত্তোলন করা টাকা থেকে বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ৬৩৫ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটি কটন, পলিয়েস্টার, সিল্কসহ অন্যান্য সুতা উৎপাদন করে তারা। গাজীপুরের শ্রীপুরে তাদের কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয় ২০০৬ সালে। পরের বছর বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায় তারা।
তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটি চার বছরে মোট ৪ টাকা ১০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছে।
বর্তামানে ইস্যুমূল্যের চেয়ে কমে লেনদেন হচ্ছে শেয়ার। বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৩২ টাকা ৭০ পয়সা।
কমিশনের সভায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট গভর্নেন্স কোড অনুযায়ী স্বাধীন পরিচালক নিয়োগের অনুমোদনের জন্য অনলাইন প্লাটফর্মও অনুমোদন দেয়া হয়।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সব কোম্পানি স্বাধীন পরিচালক নিয়োগের আবেদন অনুমোদনের জন্য অনলাইনে কমিশনে পাঠাবে।