করোনার রোগী, সংক্রমণের হারের পর এবার ভাইরাসটিতে মৃত্যুর সংখ্যাতেও লাফ দেখল বাংলাদেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১২ জনের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে যা প্রায় তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
করোনার তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে বিধিনিষেধ শুরুর দিন বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত মৃত্যুর এই তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এক দিনে এর চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল গত ১৭ অক্টোবর। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবেদন অনুযায়ী এই ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটির উপস্থিতি ধরা পড়েছে ৩ হাজার ৩৫৯ জনের দেহে।
এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী সবশেষ পাওয়া গিয়েছিল গত ২ সেপ্টেম্বর। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৪৩৬ রোগী পাওয়ার কথা জানানো হয়।
রোগীর পাশাপাশি পরীক্ষার বিপরীতে রোগীর হারও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তার ১২ দশমিক ০২ শতাংশের মধ্যে ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এর চেয়ে বেশি শনাক্তের হার ছিল গত ৩০ আগস্ট। সেদিন পরীক্ষার বিপরীতে ১২.০৭ শতাংশ রোগী পাওয়া যায়।
এ নিয়ে গত টানা সাত দিন পরীক্ষার বিপরীতে রোগীর সংক্রমণ ৫ শতাংশের বেশি পাওয়া গেল, যা দেশে করোনার তৃতীয় সংক্রমণের প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে আরও সাত দিন পর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, টানা ১৪ দিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি থাকলে তৃতীয় সংক্রমণ নিশ্চিত হয়ে যাবে।
গত ৭ জানুয়ারি থেকে টানা ৭ দিন বাড়ল শনাক্তের হার, এই সময়ে রোগী বেড়ে প্রায় তিন গুণ হয়ে গেছে
গত ৪ অক্টোবর দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর ৭ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়ায়। এরপর প্রতিদিনই শনাক্তের হার বেড়েছে। এক দিন ছাড়া রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে প্রতিদিন। যেদিন রোগী কমেছে, সেদিন ছিল শনিবার, যেদিন সাধারণত কম রোগী শনাক্তর তথ্য পাওয়া যায়। এর কারণ, শুক্রবার সাধারণত পরীক্ষা কম করানো হয়ে থাকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনার পরীক্ষা হয়েছে ২৭ হাজার ৯২০টি। আগের দিন পরীক্ষা হয়েছিল ২৪ হাজার ৯৬৪টি। অর্থাৎ করোনার উপসর্গও বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
এই রোগীদের মধ্যে সিংহভাগই ঢাকা বিভাগের। প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগীর মধ্যে ২ হাজার ৬৬৭ জনই এই এলাকার। মোট পরীক্ষারও দুই-তৃতীয়াংশ হয়েছে বিভাগে। ১৮ হাজার ৭৭৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এখানে।
মৃত্যুও বেশি হয়েছে ঢাকাতেই। ১২ জনের মধ্যে ৮ জনই মারা গেছেন এই বিভাগটিতে। বাকি বিভাগগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহে মারা গেছেন একজন করে।
এই ১২ জনই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, যাদের মধ্যে পুরুষ ও নারী সমান ছয়জন করে। এদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী একজন, ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সী চারজন আর ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়সী চারজন, ৭০ থেকে ৮০ বছর বয়সী দুজন আর ৯০ বছরের বেশি একজন।