বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ‘শিকলবন্দি’ করে সম্মেলন করেছেন বলে দাবি করেছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম। বুধবার সন্ধ্যায় ফাঁস হওয়া ফোনাপালে এ কথা বলতে শোনা যায় মাজহারুলকে।
এতে যুবলীগের কমিটি নিয়ে মাজহারুলের সঙ্গে বরগুনা জেলা যু্বলীগের সাবেক সহসম্পাদক আল আমিনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
পাঁচ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ওই ফোনালাপের রেকর্ড নিউজবাংলার কাছে পৌঁছেছে। পাঠকদের জন্য তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-
মাজহার: চেনেন মিয়া আমারে, ফালতু কথা বলেন। আমি মাজহার যদি ওই শহরে না যাইতাম মিয়া, তয় আপনাদের কপালে ইয়া ছিল। কথাবার্তি হুশবিশ কইরা মিয়া আমার লগে কইয়েন।
আল আমিন: ভাই শোনেন...
মাজহার: আমি আপনার কথাডা শুনতাছি এতক্ষণ ধইর্যা। আপনাদের জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরে শিকলবন্দি কইর্যা আমি কিন্ত সম্মেলন তুলে নিয়া আসছি।
আল-আমিন: এডা তো আপনার অপরাগতা কই নাই।
মাজহার (ধমকের স্বরে): এই মিয়া আমনাদের মত লোকজন কি বলছেন না বলছেন তাতে আমার কিছু যায় আসে?
‘সাবধান এই ধরনের কথাবার্তি বলার চিন্তাও করবেন না তো, চেষ্টাতো দূরের কথা। চিনেন আমারে মিয়া, স্টুপিড কোথাকার। কি বলছেন কথা এইডা আমারে।
আল আমিন: মানুষে যদি বলে সেটা শোনতে পারবেন না।
মাজহার: মানুষের খাইনা পড়ি, বাটপার কোথাকার। আপনি এ মাথা থেকে ওই মাথা শুরু করছেন হ্যায় খারাপ ওই খারাপ, আপনি কি মিয়া। আপনি আমারে জ্ঞান দিতাছেন। সাবধান তো বললাম, দ্বিতীয় আর একটা কথা বলবেন না।
আল আমিন: পোলাপাইনে কয়। এত মুখ খারাপ করেন ক্যান?
মাজহার: আপনার সাহস কতবড়। বরিশাল বিভাগে একমাত্র ব্যক্তি যে আপনি আমার সম্পর্কে এমন কথা বলার সাহস করছেন। স্টুপিড কোথাকার, রাখেন মোবাইল। ফারদার আপনি আমারে কোনোদিন ফোন দিবেন না। আপনি বরগুনা শহরে মাইক নিয়া আমার বিরুদ্ধে অপ্রচার চালান।
আল আমিন: ফারদার কি? দল কি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি নাকি!
এই পর্যায়ে আল আমিনকে ধমক দিয়ে কল কেটে দেন মাজহার।
কথোপকথনের বিষয়ে বরগুনা জেলা যুবলীগের সাবেক সহসম্পাদক আল আমিন বলেন, ‘সম্মেলনের পর এখন পর্যন্ত কমিটি না হওয়ায় এলাকায় বিভিন্ন গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। আমি সেই বিষয়টি তাকে বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি আমার কথাটি নিজের গায়ে টেনে নিয়ে আমার সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা দুঃখজনক। বিষয়টি আমি চেয়ারম্যান মহোদয়কে জানিয়েছি।’
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আল আমিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আমিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় যুবলীগ নেতাদের সম্পর্কে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেছে। এ ধরনের মন্তব্যে আমি তাকে দলীয় কর্মীয় হিসেবে শাসন করেছি। কিন্ত এটাকে কাজে লাগিয়ে আল আমিন সংগঠনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।’
১৬ বছর পর গত ২১ ডিসেম্বর জেলা যুবলীগের সম্মেলন হলেও, এখনও কমিটি ঘোষণা হয়নি।