নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাচ্ছে না- আগে জানালেও বিএনপির জন্য সময় রেখে অপেক্ষা করলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বুধবার বিকেল ৪টা থেকে বিএনপির জন্য এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির জন্য সময় রাখে বঙ্গভবন। বিএনপির কেউ যাননি, গেছে এনপিপির প্রতিনিধি দল।
এর আগেও দুটি নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতি গঠন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে। দুবারই বঙ্গভবনে গিয়ে আলোচনা করে আসেন বিএনপি নেতারা। তবে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ ও কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের করা দুটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রবল আপত্তি আছে।
এই অবস্থায় গত ২০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া রাষ্ট্রপতির তৃতীয় সংলাপকে ‘অর্থহীন’ আখ্যা দিয়ে তাতে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বঙ্গভবনে আগেই চিঠি পাঠিয়েছে দলটি। বিএনপি এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর আরও বেশ কিছু দল সংলাপ বর্জন করেছে।
সংলাপে অংশ না নেয়ার বিষয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। দুই দিন পর এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়ে দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এতে তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ব্যতীত নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে সংলাপ শুধু সময়ের অপচয়।’
তার পরও ১১ জানুয়ারি বঙ্গভবন থেকে বুধবারের সংলাপের যে সময়সূচি দেয়া হয়, তাতে বিএনপির জন্য সময় রাখা হয়।
সন্ধ্যা ৬টায় ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালুর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনের দরবার হলে আলোচনায় অংশ নেয়।
সংলাপে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করার ওপর জোর দেয় এনপিপি। তারা ‘সৎ ও অভিজ্ঞ’ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সার্চ কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, সৎ ও নির্দলীয় ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি তুলে ধরেছে।
প্রতিনিধি দলটি সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনেরও প্রস্তাব রাখে।
এনপিপি প্রতিনিধিদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে সহায়ক হবে।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে যেকোনো সমস্যা সমাধানে আলোচনা ও মতবিনিময় ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখে।’
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) ওয়াহিদুল ইসলাম খানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।