দুর্ঘটনা নয়, স্বামী বেলাল হোসেনকে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের গৃহবধূ হাজেরা বেগম শান্তা। স্বামী হত্যার বিচার না পেলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে শান্তা বলেন, ‘আমার স্বামীকে তিনবার হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। শেষমেশ পরিকল্পিতভাবে গাড়িচাপা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীরা আমাদের সামনেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্বামী হত্যার বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করব।’
গত ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চাপা পড়ে বেলাল হোসেনের মৃত্যু হয়। লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বেলাল সেদিন আদালত থেকে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন।
শান্তা দাবি করেন, বেলালের মাথা, পিঠ, বাম পায়ের হাঁটুসহ মরদেহের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
ঘটনার দুদিন পর সদর মডেল থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন শান্তা। মামলার আসামিরা হলেন সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ এলাকার মো. সুমন, তার ভাই রিপন হোসেন, শিপন হোসেন, একই এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেন ও চরউভূতা গ্রামের তারেক হোসেন।
তাদের সঙ্গে আগে থেকেই পৈতৃক জমি নিয়ে বিরোধ ছিল বেলালের। গত বছর প্রতিপক্ষ তাকে তিনবার হত্যার হুমকি দিয়েছিল। হুমকির বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগও করেছিলেন বেলাল।
শান্তা বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর মামলা হলে মরদেহ ময়নাতদন্তের নামে কাটাছেঁড়ার ভয় দেখায় আসামিপক্ষের লোকজন। পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাই। কিন্তু দাফনের আগে গোসল করানোর সময় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা থানা পুলিশকে জানালে পরদিন জেলা সদর হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।’
নিহত বেলাল সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরউভূতা এলাকার মৃত আবদুল মজিদের ছেলে। তিনি নারকেল-সুপারির ব্যবসা করতেন।
বেলালের হত্যায় অভিযুক্ত সুমন ও আলী হোসেন দাবি করেছেন, বেলাল সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন- এ ছাড়া তাদের আর কিছুই জানা নেই। হত্যা মামলা দিয়ে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। তারা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ও সদর থানার উপপরিদর্শক আবদুল মতিন বলেছেন, ‘নিহতের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং ঘটনার তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। তদন্ত চলছে।’