বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মদ ও মাদক আলাদা করে আইনের তাগিদ

  •    
  • ১২ জানুয়ারি, ২০২২ ১৯:১৪

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘অ্যালকোহল ও মাদককে আলাদা করে মাদকের জন্য কঠোর আইন যেন আমলে আসে। অ্যালকোহল আর ড্রাগ এক জিনিস নয়। সচেতনতার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হবে।’

মদ ও মাদককে আলাদা করে নেশাজাতীয় পণ্য মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রণয়নের তাগিদ এসেছে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক থেকে।

সচিবালয়ে বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘অ্যালকোহল ও মাদককে আলাদা করে মাদকের জন্য কঠোর আইন যেন আমলে আসে। অ্যালকোহল আর ড্রাগ এক জিনিস নয়।

‘সচেতনতার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হবে। আইন সহজ থাকায় সহজে জামিন পেয়ে যায়, এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সে ক্ষেত্রে আইনের দুর্বলতা আছে, ভবিষ্যতে আইন সংশোধন করে ত্রুটি দূর করা হবে।’

গত ১৩ ডিসেম্বর মদকে মাদকদ্রব্যের আইনের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম। পরে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মদ এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্যকে একই সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অনেক মাদকদ্রব্য আছে, যেগুলো আমদানিযোগ্য না, যেগুলো বহন করা অপরাধ। অ্যালকোহল আমদানি-রপ্তানিযোগ্য পণ্য। কিন্তু ইয়াবা, আইসসহ আরও অনেক মাদকদ্রব্য আছে যেগুলো নিষিদ্ধ পণ্য। এগুলো তো আমদানি বা রপ্তানিযোগ্য না। সে জন্য যারা ব্যবসা করেন, তাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি হয়।’

তিনি বলেন, ‘এখন সমস্যা হলো পানযোগ্য অ্যালকোহল এবং নিষিদ্ধ মাদককে একই সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এটার জন্য অ্যালকোহল যারা বিক্রি করেন, আমদানি করেন বা রপ্তানি করেন, তাদের জন্য সমস্যা হয়। তার কারণ এগুলোও তখন মাদকদ্রব্য হিসেবে চিহ্নিত হয়। এর ফলে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

‘সুতরাং এই আইনকে এক সূত্রে করা বা একই সংজ্ঞায় করা কেন সংবিধানের ৩১ ও ৪০ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে আদালত রুল জারি করেছে।’

এরপর ২৩ ডিসেম্বর সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও মদ নিয়ে আলোচনা হয়। ইয়াবা, এলএসডি, আইস, ফেনসিডিল, হেরোইনের মতো মাদকের হাত থেকে তরুণ ও যুবকদের মনোযোগ সরাতে মদ ও গাঁজায় ছাড় দেয়ার পক্ষে মত আসে সেখান থেকে।

আলোচনায় দাবি করা হয়, অ্যালকোহলের ওপর কিছুটা ছাড় দিলে মাদক সেবন কমতে পারে। একই সঙ্গে গাঁজা সম্পর্কে আরও চিন্তাভাবনা করা উচিত বলে মত উঠে আসে এই আলোচনায়।

২৮ ডিসেম্বর সচিবালয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মদকে মাদক থেকে বের করতে আরও সময় চান। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি মদ বা অ্যালকোহল যেগুলো আছে এখানে, যারা বিশেষজ্ঞ আছেন তারা বলছেন, অনেক আগে থেকেই এটাকে মাদক বলেই চিহ্নিত করা আছে। কোর্টেরও একটি নির্দেশনা আছে। এটাকে আমরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব।’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘এলএসডি, আইসিডিসহ যেসব মাদক আসছে, সেগুলো প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করে এসব মাদক ঢোকা প্রতিরোধ করবে। ধরা পড়ার পর মাদকদ্রব্য ঠিকমতো ধ্বংস করা হচ্ছে কি না, সেগুলোর রেকর্ড স্বচ্ছভাবে সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।

‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার জন্য, যাতে তারা ফিরে আসে। বেসরকারি খাতে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, সেটা মানসম্পন্ন মনে হয়নি, সরকারিভাবে যা হচ্ছে তা ব্যাপক আকারে নয়। আমরা স্বাস্থ্য বিভাগকে পরামর্শ দিয়েছি ভবিষ্যতে একটা বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি করার জন্য। যাতে এদের নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা করা যায়।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো যেন দেশে তাদের কার্যালয় খোলে, এ জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর অফিস বাংলাদেশে থাকলে যোগাযোগ করা সহজ হয়। এ জন্য বিটিআরসিকে অনুরোধ করেছি এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় যাতে বাংলাদেশে থাকে।

‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও দেয়া হচ্ছে। সেই বিজ্ঞাপনের টাকা কীভাবে পাঠানো হচ্ছে, সে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক খতিয়ে দেখবে।’

র‍্যাব শীর্ষ কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘র‍্যাব সদস্যদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা তা পর্যালোচনা করে মনে করছি সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণে বা কিছু ভুল তথ্যের কারণে যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।

‘আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি সঠিক তথ্যাবলি যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিতে, যাতে তাদের এই ভুল ধারণা ভেঙে দেয় এবং সেগুলো তারা সংশোধন করেন। চিঠিতে কী কী বলেছে, সেসব অভিযোগের উত্তর তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তৈরি করা হবে। সংশ্লিষ্ট শাখার বক্তব্য নিয়েই অভিযোগের প্রতি উত্তর দেয়া হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা মিলেই সঠিক তথ্য জানাবে।’

অপরাধে জড়িয়ে পড়া বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কিছু বিদেশি নাগরিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। তাদের গ্রেপ্তার করে ডিটেনশনে রেখে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।

‘আন্তর্জাতিক বিধান অনুযায়ী কোনো দেশে থাকতে হলে ভিসার মেয়াদ থাকতে হবে। যাদের ভিসার মেয়াদ চলে গেছে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেব।’

অবৈধ পণ্য আনা-নেয়া রুখতে পার্সেলে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে বলেও জানান তিনি। আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘অনেক সময় পার্সেলের মাধ্যমে অনেক অবৈধ জিনিস পাচার হয়। সে জন্য আগে জিপিওতে পরীক্ষা করে পাঠানো হতো।

‘এমন তথ্য পাওয়া গেছে পোস্ট অফিস থেকে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে মাঝখানে গিয়ে সেটি চেঞ্জ হয়ে গেছে, পার্সেল কে পাঠাচ্ছে নাম থাকত না। এখন শুধু নাম থাকলেই হবে না, আইডি কার্ড অনুসারে পার্সেল পাঠানো হবে। জিপিওতে স্ক্যানিং না করে এয়ারপোর্টেও করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর