নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন জানিয়ে শামীম ওসমান যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তা আচরণবিধির লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন পরিস্থিতি দেখতে এসে বুধবার দুপুরে নগরীর মরগান স্কুলে প্রিসাইডিং ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, ‘শামীম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে মাঠে নামার ঘোষণা দিলেও তিনি নামেননি। এতে নির্বাচনি আচরণবিধির লঙ্ঘন হয়েছে, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়।’
ভোটের প্রচারে নামার সুযোগ না থাকলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদিনই আলোচনায় শামীম ওসমান। তাকে নিয়ে কথা বলছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী, কথা বলছেন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার।
এসব নিয়ে শুরুতে নীরব থাকলেও গত সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান জানান সরকারি দলের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ নৌকার ঘাঁটি, শেখ হাসিনার ঘাঁটি। এখানে অন্য কোনো খেলা খেলার চেষ্টা করবেন না। কে প্রার্থী, হু কেয়ার্স? প্রার্থী আমগাছ হোক, আর কলাগাছ হোক। সব সময় নৌকার প্রতি সাপোর্ট।’
সংবাদ সম্মেলনেই শামীম ওসমান জানিয়েছিলেন, আইনপ্রণেতা হয়েও এই সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘিত হলে নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। ছবি: নিউজবাংলা
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস সিইসির। তিনি বলেন, ‘আমি নারায়ণগঞ্জে কোনো সমস্যা দেখি না। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সব রকম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নির্বাচনে যে প্রার্থীরা আছেন তারা মৌখিক অভিযোগ ছাড়া কোনো সংঘর্ষে জড়ায়নি। আমি মনে করি, সংঘর্ষ ছাড়াই এখানে নির্বাচন হবে।’
ইউপি নির্বাচনের সহিংসতার প্রসঙ্গ তোলা হলে নূরুল হুদা বলেন, ‘অধিকাংশ নির্বাচনে নির্বাচন-পরিবর্তী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতাগুলোই এ দেশের নির্বাচনগুলোকে অনেক প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’
দেশে ফের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। শনাক্তের হার ছাড়িয়েছে ৯ শতাংশ। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার থেকে আরোপ করা হচ্ছে নানা বিধিনিষেধ।
এমন পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ সিটিতে নির্ধারিত দিনেই ভোট হবে কি না, এমন প্রশ্ন রাখা হয় সিইসির কাছে।
তিনি বলেন, ‘এখন তো নির্বাচনি সভা-সমাবেশ বন্ধ করার সুযোগ নেই। তবে বড় ধরনের কোনো নির্দেশনা আসলে বিষয়টি আমরা অবশ্যই দেখব। পাশাপাশি ভোটের দিন সব ভোটকেন্দ্রে অবশ্যই ভোটার এবং এ কাজে যারা নিয়োজিত থাকবেন তাদের সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।’
ইভিএম বিতর্ক নিয়েও কথা বলেন নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘ইভিএম এমন একটা মেশিন, যার মাধ্যমে ভোট গ্রহণ শেষে ১০ মিনিটের মধ্যে ভোট গণনা করতে পারি এবং এটি একটি পরিচ্ছন্ন মেশিন।’