উচ্চ মাধ্যমিক বা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে হবে। এর বাইরে ভুয়া ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন থেকে আবেদন করে কোনো শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রতারিত হলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ দায় নেবে না বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সই করা অফিস আদেশে এ কথা বলা হয়।
জানতে চাইলে অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘কয়েকটি ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করে শিক্ষার্থীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। তাই সবাইকে সতর্ক করার জন্য আজ অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।’
অফিস আদেশে বলা হয়, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রমে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু প্রতারকচক্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থেকে সুকৌশলে শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করে তাদের অনুমতি ছাড়াই অনলাইনে ভর্তির আবেদন করছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সবাইকে এ ধরনের প্রতারকচক্র থেকে সাবধান থাকতে হবে।
আরও বলা হয়, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতারণায় জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের প্যানেল বা সার্ভার বন্ধসহ পাঠদান স্থগিত করা হবে।
বোর্ডের নির্ধারিত ভর্তি ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোনো ভুয়া ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন থেকে আবেদন করে কোনো শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রতারিত হলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই দায় নেবে না বলেও অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।
গত ৮ জানুয়ারি উচ্চ মাধ্যমিক বা একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তি অনলাইনে আবেদন শুরু হয়। আবেদন করা যাবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
আগে এসএমএসের মাধ্যমে ভর্তির আবেদনের সুযোগ থাকলেও এবার শুধু অনলাইনেই আবেদন করতে হবে। ভর্তি কার্যক্রম শেষে আগামী ২ মার্চ থেকে শুরু হবে একাদশ শ্রেণির ক্লাস।
যারা আবেদন করতে পারবেন
২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে যারা এসএসসি পাস করেছেন, তারা আবেদন করতে পারবেন। তবে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা ২২ বছর বয়সেও আবেদন করতে পারবেন।
আর যেসব শিক্ষার্থী এসএসসি ও দাখিলের ফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করবে তারা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করলেও ফল পরিবর্তনকারীরা ২২ ও ২৩ জানুয়ারি আবেদন করতে পারবে।
২৪ জানুয়ারি পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হবে। আর ২৯ জানুয়ারি প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে।
অন্যদিকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতেও ৮ জানুয়ারি থেকে আবেদন নেয়ার কথা রয়েছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ভর্তি নীতিমালাসহ এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
কোন প্রতিষ্ঠানে আবেদন ও ভর্তি ফি কত
আবেদন ও নির্বাচন-পর্ব শেষে ১৯ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে। এবার আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। নীতিমালায় ঢাকা ও জেলা পর্যায়ে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফিসহ সব ব্যয় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
সে অনুযায়ী ঢাকা মহানগর এলাকার ক্ষেত্রে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ৫ হাজার টাকা, ঢাকা মহানগরের বাইরে ৩ হাজার, জেলা পর্যায়ে ২ হাজার আর উপজেলা ও মফস্বলে ১ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করা যাবে।
নির্ধারিত ফির বেশি অর্থ আদায় করা যাবে না। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি গ্রহণ করা যাবে। উন্নয়ন ফি আদায় করা যাবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, সারা দেশে একাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া হয় এমন কলেজ ও মাদ্রাসা আছে ৮ হাজার ৮৬৪টি। অন্যদিকে সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আছে সাড়ে ৫০০।
কলেজ ও মাদ্রাসায় আসন আছে ২৪ লাখ ৪০ হাজার ২৪৯টি। আর পলিটেকনিকে আছে ১ লাখ ৬৯ হাজার। সব মিলিয়ে এ স্তরে আসনসংখ্যা ২৬ লাখ ৯ হাজার ২৪৯টি।
বিপরীত দিকে এসএসসি, দাখিল এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে পাস করেছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। এর মধ্যে এসএসসিতে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ২১১ জন, দাখিলে ২ লাখ ৭২ হাজার ৭২২ জন আর কারিগরি শাখা থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৩ জন পাস করেছেন।
আবেদন করবেন যে ওয়েবসাইটে: http://www.xiclassadmission.gov.bd