পথচারী পারাপারে খুলে দেয়া হলো ঢাকা বিমানবন্দর মহাসড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন আন্ডারপাস।
গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বুধবার সকালে আন্ডারপাসটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এমইএস এলাকায় ছিল না কোনো ফুটওভার ব্রিজ। ছিল একটি মাত্র জেব্রা ক্রসিং। সাধারণ পথচারীসহ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং নিকটস্থ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা সবাইকে তীব্র ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কটি পার হতে হতো।
২০১৯ সালের ২৯ জুলাই ওই জায়গা দিয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে প্রাণ যায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর। এর জেরে রাজধানীসহ সারা দেশে সড়ক আন্দোলন।
সেই বাস্তবতার নিরিখে সেখানে একটি আন্ডারপাস নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে আন্ডারপাসটি নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয় সেনাবাহিনীকে।
একদিকে বিমানবন্দর, অন্যদিকে ঢাকা শহর। তাই রাস্তা খনন করে আন্ডারপাস নির্মাণ ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে বক্স পুশিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেনাবাহিনী। ফলে মাটির নিচের কাজ টের পেল না সড়কের ওপরে থাকা কেউ।
আন্ডারপাসটিতে আছে চলন্ত সিঁড়ি, লিফট ও হুইলচেয়ারসহ চলাচলের জন্য আছে ৩২০ মিটার র্যাম্প। আরও আছে দৃষ্টিনন্দন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডর্ম। দেয়ালজুড়ে আছে স্বাধীনতার গল্প।
প্রকল্পটির উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৯ সালের ২৯ জুলাই এয়ারপোর্ট মহাসড়কে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেই শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে দুজন শিক্ষার্থী আবদুল করিম রাজীব ও দিয়া খানম প্রাণ হারায়। আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
ওই ঘটনার পরই আন্ডারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা সেই আন্ডারপাস উদ্বোধন করতে পারছি। কারণ এই রাস্তাটি দিয়ে হাজার হাজার পথচারী চলাচল করে, শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। এই রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যথেষ্ট চওড়া রাস্তা। যে কারণে এটি অত্যন্ত প্রয়োজন।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি মনে করি, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য এই আন্ডারপাসটি বিশাল ভূমিকা রাখবে। এখানে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও বয়স্ক মানুষের কথা বিবেচনায় এনে লিফটের ব্যবস্থা করা আছে। র্যাম্প করা আছে এবং চলন্ত সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
এই আন্ডারপাস নির্মাণের ফলে একদিকে শিক্ষার্থী ও পথচারীর সড়ক পারাপার নিরাপদ হবে, অন্যদিকে এয়ারপোর্ট মহাসড়কের এই অংশে যানজট মুক্ত থাকবে বলেও মনে করেন শেখ হাসিনা।
এ সময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংকে ৪ মহাসড়ক, কক্সবাজারের বালুখালী থেকে বান্দরবানের ঘুনধুম সীমান্ত সংযোগ সড়ক এবং রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরে চেংগী নদীর ওপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।