করোনাভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধে সরকারের দেয়া নির্দেশাবলী বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের অপপ্রয়াস বলে মনে করে দলটি।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি নেতা আগের রাতে তার দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন।
এই বিবৃতি দেয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে সস্ত্রীক ফখরুলের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে গণমাধ্যমে। তিনি ও তার স্ত্রী চিকিৎসকদের পরামর্শে ঘরে আইসোলেশনে আছেন বলে পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব ও তার স্ত্রী রাহাত আরা করোনার দুই ডোজ টিকাই নিয়েছেন।
করোনার তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তৃতীয়বারের মতো বিধিনিষেধ জারি হয়। এতে বৃহস্পতিবার থেকে যে কোনো সামাজিক, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহন, মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে গেলে জরিমানা, টিকা ছাড়া স্কুলে যেতে না দেয়াসহ ১৩ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়।
গত ৪ নভেম্বর নিয়ন্ত্রণে আসা করোনার রোগী গত ১০ দিন ধরেই টানা বাড়ছে। বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনও শনাক্ত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে নীতিমালা, সেটি অনুযায়ী টানা ১৪ দিন শনাক্ত রোগীর হার ৫ শতাংশের বেশি হলে করোনার তৃতীয় ঢেউ ধরে নিতে হবে। এরই মধ্যে টানা ৫ দিন পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ শতাংশের বেশি হয়েছে। এই ৫ দিনে ৫ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশ ছুঁইছুঁই হয়ে গেছে এই হার। এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়ে গেছে আড়াই হাজার ছুঁইছুঁই।
এই পরিস্থিতিতে জারি করা বিধিনিষেধের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে বলেন, ‘দলটির স্থায়ী কমিটি সদস্যরা মনে করে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সমাবেশ নিষেধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। সরকার জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিরোধ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কোভিড-১৯ এবং ওমিক্রনকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে বদ্ধ স্থানের চেয়ে উম্মুক্ত স্থানে সংক্রমণ বিস্তারের সম্ভাবনা কম বলেছে, সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উম্মুক্ত স্থানে সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সমাবেশ নিষেধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।’
সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে ‘হাস্যকর ও নিম্নমানের রসিকতা’ উল্লেখ করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনগুলোও এমনই কিংবা তার চেয়েও খারাপ হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করে যে, ক্ষমতার মোহে বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকারই ষড়যন্ত্র করে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ধ্বংস করেছে; দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং অপশাসনের দ্বারা জনগণকে ক্রমবর্দ্ধমান ঋণের বেড়াজালে আবদ্ধ করেছে এবং ক্রমাগত জনগণের মৌলিক মানবাধিকার হরণ করে বিশ্বদরবারে দেশের মর্যাদা ধ্বংস করে দিয়েছে।’