স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রচারণায় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের (এমপি) অংশ নিতে না দেয়ার বিধানকে বৈষম্যমূলক মন্তব্য করে এ ধরনের প্রচারণায় তাদের পাশে চেয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে তার সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি নৌকার পক্ষে কাজ করবেন। আমি মনে করি এটিই সঠিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেটি নিয়ে দেখলাম কিছু গণমাধ্যমে শামীম ওসমান নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন এমন কথা বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন প্রণীত আচরণবিধিতে বলা হচ্ছে, সংসদ সদস্যরা কোনো স্থানীয় নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কিন্তু আশপাশে কোনো দেশেই এ ধরনের আচরণবিধি নেই, ইউরোপেও এ ধরনের বিধিনিষেধ নেই।
‘মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যরা অন্য দেশে তাদের প্রটোকল বাদ দিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন। পার্শ্ববর্তী দেশে এমনকি মুখ্যমন্ত্রীরা পারেন, মন্ত্রীরাও পারেন। সে ক্ষেত্রে শুধু প্রটোকল সুযোগ-সুবিধা বাদ দিতে হয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের ওপর নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের বিধিনিষেধ বৈষম্যমূলক। ২০১৫ সালেও এ বিধিনিষেধ ছিল না। অনেকেই বলছেন যে এই বিধিনিষেধ অগণতান্ত্রিক।
‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়টি বেশ কয়েকবার নির্বাচন কমিশনের নজরে আনা হয়েছে এবং কয়েকটি বৈঠকে আমি নিজেও ছিলাম। সেখানে এ বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়েছিল।’
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রিজভী সাহেবের এই বক্তব্যে মনে হয়, আসলে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা দিগ্বিদিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন এবং আবোল-তাবোল বলছেন, এটি তারই ধারাবাহিকতা।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে করোনা মোকাবিলা করেছেন সেটি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোসহ অনেক দেশই করতে পারেনি। এটি সারা বিশ্ব কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে এবং করোনা মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হওয়ার কারণে আমাদের দেশের অর্থনীতি চাঙা আছে।
‘করোনা মহামারিতে গত বছর পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশে পজিটিভ জিডিপি গ্রোথ হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি, বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। করোনা এবং টিকা নিয়েও বিএনপির নেতারা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন, আবার নিজেরাই করোনার টিকা নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘রিজভী আহমেদসহ বিএনপির সামনের সারির নেতারা ফ্রন্টলাইনার, কারণ তারা রাজনীতির মাঠে সামনে থেকে সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করছেন। আমরা চাই তারা সুস্থ থাকেন এবং ফ্রন্টলাইনার হিসেবে বুস্টার ডোজ নেবেন এই আশা করি।
‘তারা ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে দেশে প্রচণ্ড ধ্বংসাত্মক রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারা পেট্রোলবোমা, আগুনবোমা নিক্ষেপ করে মানুষকে হত্যা করেছেন এবং দিনের পর দিন হরতাল, অবরোধের মাধ্যমে মানুষকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। মানুষ সেই রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা যে আবার সেই পথে হাঁটতে পারে সেটির ইঙ্গিত স্পষ্ট এবং সেটি হলে দেশের মানুষ তাদেরকে প্রতিহত করবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন তারা মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন। আবার একই অপরাজনীতি যদি তারা শুরু করেন এবং অপরাজনীতির আশ্রয় যেন, তারা চিরতরে মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন।’