এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটসহ একাধিক সংগঠনের নেতারা।
রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষক-কর্মচারিরা।
সমাবেশ থেকে মুজিব শতবর্ষেই শিক্ষার জাতীয়করণ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তারা। তা না হলে লাগাতার কমসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
সমাবেশে বক্তরা জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিরা পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাঠ্যক্রম, আইন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হলেও শিক্ষাব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারিদের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিরাট পার্থক্য রয়েছে।
অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান বলেও উল্লেখ করেন বক্তরা। অধিকাংশ শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে চাকরি করেন, তাদের জন্য বদলি ব্যবস্থা চালু খুব জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তারা।
বক্তরা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত একজন শিক্ষককে ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও ২৫% উৎসব ভাতা পান। বিশ্বের কোনো দেশে শিক্ষাব্যবস্থায় এমন বৈষম্য নেই। এই বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ জরুরি।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের আহ্বায়ক মো. মাঈন উদ্দিনের মতে, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখার জন্য মুজিব শতবর্ষই এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের মাহেন্দ্রক্ষণ। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। স্বল্প খরচে সকল নাগরিক একই মানের মানসম্মত শিক্ষা পাবে, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া হ্রাস পাবে, প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে থাকা অর্থের অপচয় রোধ হবে।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবিতে আন্দোলন করছি। ১০ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবি জানানো হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, সরকারিকরণের দাবি না মানা হলে ১০ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। আমরা সেটি চালিয়ে যাচ্ছি।’
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি তালুকদার আব্দুল মান্নাফ, মহাসচিব মো. মেজবাহুল ইসলাম প্রিন্স, নির্বাহী মহাসচিব অরুপ সাহা, বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক অনলাইন পরিষদের সভাপতি আবু তালেব সোহাগ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক বেনী মাধব দেবনাথ, সদস্য সচিব মো. দীদার হোসেনসহ আরও অনেকে।