বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশের মাটিতে বিদেশি সবজি স্কোয়াশ

  •    
  • ১১ জানুয়ারি, ২০২২ ০৮:২৭

স্কোয়াশ দেখতে শসার মতো হলেও আকৃতি আরও বড়। কোনো কোনোটির ওজন দুই কেজি ছাড়িয়ে হয়ে গেছে আড়াই কেজি পর্যন্ত। কেউ কেউ এটিকে লম্বাকৃতির মিষ্টি কুমড়া ভেবেও ভুল করতে পারেন।

জমিতে বীজ বপনের দুই মাসের মধ্যেই বড় হয়ে গেছে গাছগুলো। সবুজ পাতার ফাঁকে ফুটেছে হলুদ ফুলও। আর গাছের গোড়ার দিকে বোটায় ধরেছে অচেনা এক সবজি।

দেখতে শসার মতো হলেও আকৃতি আরও বড়। কোনো কোনোটির ওজন দুই কেজি ছাড়িয়ে হয়ে গেছে আড়াই কেজি পর্যন্ত। কেউ কেউ এটিকে লম্বাকৃতির মিষ্টি কুমড়া ভেবেও ভুল করতে পারেন।

স্কোয়াশ নামের বিদেশি এই সবজি এখন চাষ হচ্ছে উত্তরের জেলা নওগাঁয়। সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামে কৃষক আব্দুল লতিফের এক বিঘা জমিতে এখন স্কোয়াশের মেলা।

বিচিত্র এই সবজির ক্ষেত দেখার জন্য প্রায় প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশপাশের এলাকার কৃষকরাও। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ শীতকালীন এই সবজিটি খেতেও সুস্বাদু। উচ্চ ফলনশীল হওয়াও তা লাভজনকও।

ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে দামও বেশি থাকায় স্কোয়াশ চাষে এবার বড় লাভের আশা করছেন লতিফ।

স্থানীয় ফতেপুর গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী বলেন, ‘আমরা মূলত দেশীয় বিভিন্ন সবজির চাষ করি। এই প্রথম মঙ্গলপুর গ্রামের লতিফ বিদেশি জাতের স্কোয়াশ চাষ করেছেন। এই সবজির কথা আগে কখনও শুনিনি। নভেম্বরে বীজ রোপণের পর বর্তমানে দুই থেকে আড়াই কেজি ওজন হয়েছে প্রতিটি স্কোয়াশের। রোগবালাইও নাই তেমন। মনে হচ্ছে, এটি লাভজনক। আমিও এটি চাষ করার পরিকল্পনা করেছি।’

নোমান হোসেন নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘খুব অল্প সময়ে গাছে স্কোয়াশ ধরেছে। বাজারে এর দামও নাকি ভালো। চাষের খরচও তুলনামূলক অনেক কম। তাই এটি চাষের বিষয়ে লতিফ ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। কৃষি অফিস থেকে সহায়তা ও পরামর্শ পেলে আমরাও স্কোয়াশ চাষ করব।’

মঙ্গলপুর গ্রামের স্কোয়াশ চাষি আব্দুল লতিফ বলেন, ‘শীতে সাধারণত আলু, টম্যাটো, শিম, কপির আবাদ করতাম। গত বছরের অক্টোবরে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় স্কোয়াশ চাষ শুরু করি। নভেম্বরের শুরুতে এক বিঘা জমিতে বীজ লাগাই। বর্তমানে ২ মাস ৯ দিনেই স্কোয়াশগুলো প্রায় বিক্রির উপযুক্ত হয়ে গেছে। তবে চলতি মাসের শেষের দিকে ক্ষেত থেকে তুলে বিক্রি করা শুরু করব।’

বীজ বপনের দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে স্কোয়াশগুলো প্রায় বিক্রির উপযুক্ত হয়ে যায়। ছবি: নিউজবাংলা

বীজ বপন ও পরিচর্যার বিষয়ে লতিফ জানান, তার এক বিঘা জমিতে ১৩টি সারি রয়েছে। প্রতিটি সারিতে আছে ৪২টি স্কোয়াশ গাছ। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ১০টি করে স্কোয়াশ পাওয়ার আশা তার। নিয়ম করে প্রতিদিন বিকেলে গাছগুলোতে পানি দেন তিনি।

খরচ ও লাভের বিষয়ে লতিফ জানান, স্কোয়াশের বীজ, সার, সেচ ও ওষুধ খরচ দিয়ে প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। তবে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে কিছু সহায়তা পেয়েছেন তিনি। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি স্কোয়াশ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি।

শেষ পর্যন্ত ফলন ভালো হলে ক্ষেত থেকে প্রায় ১০০ মন স্কোয়াশ পাওয়ার আশা লতিফের। এমন হলে সব খরচ বাদ দিয়ে এক লাখ টাকার মতো লাভ হতে পারে বলে জানান তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি নওগাঁর উপপরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্কোয়াশ মূলত একটি শীতকালীন ও বিদেশি সবজি। এটি মিষ্টি কুমড়ার মতো সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে অল্প খরচেই এর চাষ হয়। দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় অল্প পরিশ্রমেই এর থেকে অধিক আয় করা সম্ভব।’

তিনি মনে করেন, স্কোয়াশ চাষ বাড়ানো গেলে নওগাঁর কৃষি অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে।

যদি কোনো কৃষক স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হন, তবে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ ও সহায়তা করা হবে বলে জানান শামসুল ওয়াদুদ।

এ বিভাগের আরো খবর