বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনা: চলাচলে বিধিনিষেধ ফিরল, সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা

  •    
  • ১০ জানুয়ারি, ২০২২ ১৮:১৮

দেশে করোনা পরিস্থিতি কিছুদিন আগেও নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে দ্রুত অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতি। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী পর পর দুই সপ্তাহ এই হার ৫ শতাংশের বেশি হলেই তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ নিশ্চিত হয়ে যাবে।

দেশে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠার মধ্যে মানুষের চলাচলে চতুর্থবারের মতো বিধিনিষেধ দিল সরকার। গণপরিবহনে যাত্রী বহন করতে হবে ধারণক্ষমতার অর্ধেক। মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি হয়। এই আদেশ কার্যকর হবে আগামী ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে।

এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো দেশে এই ধরনের বিধিনিষেধ জারি হলো।

এতে মোট ১১টি বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে একটি হলো সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা। সামাজিক-রাজনৈতিক, কোনো জমায়েতই করা যাবে না।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর প্রথম, ২০২১ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো লকডাউন দেয়ার সময় দ্বিতীয় দফা, একই বছরের জুলাইয়ে শাটডাউন দেয়ার সময় তৃতীয় দফায় এই ধরনের বিধিনিষেধ দেয়া হয়।

দেশে করোনা পরিস্থিতি কিছুদিন আগেও নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে দ্রুত অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতি। বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গে এরই মধ্যে স্কুল বন্ধ করে দিয়ে রাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

গত ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক হয় পরিস্থিতি নিয়ে। বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জানানো হয়, রোগী বাড়লেও স্কুল-কলেজ বন্ধ হবে না, লকডাউনের চিন্তাও নেই আপাতত।

তবে পরদিন সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন উল্টো কথা। জানিয়েছেন, লকডাউনের বিষয়টি তাদের চিন্তায় রয়েছে। তিনি জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার আবার বেড়ে যাওয়ায় মানুষের চলাফেরায় আবার বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে ২ হাজার ২৩১ জন নতুন রোগী। রোগীর এই সংখ্যা গত ১০ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ।

পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ, যা আগের দিন ছিল ৬.৭৮ শতাংশ। আর দুই দিন আগেও শনাক্তের হার ছিল ৫ শতাংশের বেশি।

পর পর ৪ দিন শনাক্তের হারের এই ঊর্ধ্বগতির কারণে করোনার তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার পরপর দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের বেশি থাকলে দেশে তৃতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে বলে ধরে নিতে হবে। এই মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে বিশ্বব্যাংক।

গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি করোনার প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু এই পরিস্থিতি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। মার্চেই দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়।

এরপর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে ৪ অক্টোবর।

যে ১১ বিধিনিষেধ

# দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সকল জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে।

# অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে কোনো ব্যত্যয় রোধ করতে সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।

# হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য করোনার টিকার সনদ প্রদর্শন করতে হবে।

#১২ বছরের বেশি সকল শিক্ষার্থীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পরে টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না।

# স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরসমূহে স্ক্রিনিং-এর সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টে থাকা ক্রুদের জাহাজের বাইরে আসা চলবে না। স্থলবন্দরগুলোতেও আসা ট্রাকের সঙ্গে কেবল চালক থাকবে। কোনো সহকারীকে পোর্টের বাইরে আসতে দেয়া হবে না। বিদেশগামীদের সঙ্গে বিমানবন্দরে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

# ট্রেন, বাস এবং লঞ্চ সক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। চালক ও সহকারীদের করোনা প্রতিরোধী টিকা নিতে হবে।

# বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কোভিড টিকা সনদ থাকতে হবে। দেশে এসেই তাদের র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করতে হবে।

# স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরার বিষয়ে মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় সচেতন করবেন ইমামরা। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

# করোনার টিকা ও বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার এবং উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় তাদেরকে সহযোগিতা দেবে।

# পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশ বন্ধ থাকবে।

# কোনো এলাকায় বিশেষ কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

এ বিভাগের আরো খবর