গত বছরের ২০ নভেম্বর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের ফলদা হিন্দুপাড়ায় কিস্তি আদায় করতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন মিরা খাতুন নামে এক এনজিও কর্মী।
নিখোঁজের দেড় মাস পার হলেও এখনও খোঁজ মেলেনি তার।
৩৪ বছরের মিরার বাড়ি ভূঞাপুরে। এসএসএস নামের একটি এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। তার আট ও ছয় বছরের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে।
নিখোঁজের দিন ভূঞাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ।
এ কারণে সোমবার বেলা ১১টায় টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে মিরার পরিবার।সংবাদ সম্মেলনে মিরা খাতুনের মা হুসনেয়ারা বেগম জানান, প্রতিদিনের মতো তার মেয়ে ভূঞাপুরের ফলদা শাখা থেকে কিস্তি আদায়ের জন্য সেদিনও বের হন। মাইজবাড়ী, ঝনঝনিয়া এলাকা থেকে কিস্তি আদায়ের পর চণ্ডীপুর ও হিন্দুপাড়ায় কিস্তি আদায় করতে গিয়ে মিরা নিখোঁজ হন।
সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও অফিসে না যাওয়ায় সহকর্মীরা তার মোবাইলে বারবার চেষ্টা করেও তাকে না পেয়ে আশপাশে খোঁজ করেন। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে আর পাওয়া যায়নি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, ওই দিন রাত ৯টার দিকে ভূঞাপুর থানায় একটি জিডি করেন এসএসএস ফলদা শাখার ম্যানেজার বন্যা আক্তার।
কিন্তু নিখোঁজের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও পুলিশের সহযোগিতা পাননি তারা। পুলিশকে সন্দেহভাজন কয়েকজনের নাম বললেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মিরার মা বলেন, ‘আমার মেয়ের নিখোঁজের দিন থেকে এলাকার বেশ কয়েকজন লোকও গায়েব। অথচ পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে না বা ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
‘তাই প্রশসানের কাছে একটিই দাবি, আমার মেয়েকে ফিরে চাই। তার অবস্থান জানতে চাই। কেউ তাকে হত্যা করেছে, নাকি গুম করেছে, সে বিষয়ে জানতে চাই।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘মিরার এক ছেলে মিরাজ চতুর্থ শ্রেণিতে ও আরেক ছেলে মুকিত তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এই ছোট বাচ্চাদের মানুষ করার জন্য আমার মেয়ের ফিরে আসাটা খুবই জরুরি।’
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল ওহাব বলেন, ‘যেহেতু মামলাটি অনেক স্পর্শকাতর তাই খুব সাবধানে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমে তারা কোনো তথ্যই দিতে পারেনি, তাই আমরা আমাদের মতো করে কাজ করেছি। কিন্তু ভিকটিমের কাছে ফোন না থাকায় তাকে খুঁজে পেতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুতই তাকে খুঁজে বের করা হবে।’