দুই জেলার বাস শ্রমিকদের মধ্যে বিবাদ। সেই বিবাদে বন্ধ রাখা হয়েছে বাস চলাচল। গন্তব্যে পৌঁছাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলছে। তবে তা দেখার যেন কেউ নেই।
পিরোজপুর থেকে ষষ্ঠ দিনের মতো আশপাশের পাঁচ জেলাগামী গাড়িগুলোর চাকা ঘুরছে না রাস্তায়। ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরিশাল থেকে কোনো বাসও ঢুকছে না এ জেলায়। এ অবস্থায় অন্য বাহনে বাড়তি টাকা খরচ করে প্রয়োজন মেটাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
বাস চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগ নিচ্ছেন পিরোজপুর থেকে ঝালকাঠি ও বরিশাল রুটের বাইকচালকরা। যার কাছ থেকে যেমন পারছেন, তেমন ভাড়া নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
তবে চালক মুক্তার খান বলেন, ‘আগে প্রতিদিন দু-তিনটা খ্যাপ মারতাম। গেল কয়েক দিন যাত্রী উঠিয়েছি শ’খানেক। এতে আয় বেড়েছে আগের থেকে কয়েক গুণ। যাত্রী বেশি হলেও আমরা ভাড়া বাড়াইনি বা কমাইনি। সবকিছু আগের মতোই আছে।’
আরেক চালক মিন্টু হাওলাদার বলেন, ‘এখন আর যাত্রীদের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। একটু পরপর ট্রলার ভরে যাত্রী নামছেন বরিশাল যাওয়ার জন্য। তবে ছাত্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ এই ভাড়া মেটাতে পারছে না। তাদের অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে অটোর জন্য। আমরাও চাই দ্রুত বাস চালু হোক।’
তিনি জানান, বেকুটিয়া ফেরিঘাট স্ট্যান্ড থেকে ঝালকাঠি পৌঁছে দিতে একজন আরোহীর কাছ থেকে ১৫০ টাকা নেয়া হতো। আর বরিশালে পৌঁছে দিতে নেয়া হতো ২০০ টাকা। এখনও সেই ভাড়াই নেয়া হচ্ছে।
তবে বেশ কয়েকজন আরোহী জানিয়েছেন, চালকরা সুযোগ বুঝে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে। বিশেষ করে এই পথে অপরিচিতদের পকেট কাটা হচ্ছে। যাত্রীপ্রতি বেশি নেয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা।
আরোহী মিরাজ মোল্লা বলেন, ‘বাস বন্ধ থাকায় বাইকে বরিশাল যেতে হচ্ছে। এখানেও চাওয়া হচ্ছে বেশি ভাড়া। এ ব্যাপরে প্রশাসনের কোনো ভূমিকা দেখলাম না।’
বাইকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রসঙ্গে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে কি না সেটা আমার জানা নেই। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। আপনার (রিপোর্টার) মাধ্যমেই এই প্রথম জানলাম। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’
বাস চলাচল কবে শুরু হবে এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বাস চলাচল শুরু করতে ইতিমধ্যে বিভাগীয় কমিশনার স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।’
ঝালকাঠি বাস টার্মিনালের অফিস কক্ষে গত ৪ জানুয়ারি পিরোজপুরের বাস ড্রাইভার অরবিন্দ কুমার দাসকে আটকে মারধর করা হয়। ছিনিয়ে নেয়া হয় তার সঙ্গে থাকা ৩৯ হাজার টাকা।
এই অভিযোগ তুলে ৫ জানুয়ারি থেকে পাঁচ জেলায় বাস চালানো বন্ধ করে দেয় পিরোজপুর বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।