দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকলেও এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে না। আরও এক সপ্তাহ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটির রোববারের বৈঠক শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিসহ কোভিড নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কমিটির একাধিক সদস্যের উপস্থিতিতে রোববার রাতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও করোনা নিয়ন্ত্রণে পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এই ভাইরোলজিস্ট বলেন, ‘এখনই বন্ধ হচ্ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে আরও এক সপ্তাহ। এরপর পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
করোনা নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য বিধিনিষেধ জারি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হবে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বৈঠকের আনুষঙ্গিক অনেক বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। বিধিনিষেধ এলেও তা জানিয়ে দেয়া হবে।’
কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার দরকার নেই। সরকারকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করেছি। আমরা এক/দুই সপ্তাহে পর কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনা করে আবার বসব। প্রয়োজনে সেরা বিকল্প ঠিক করার জন্য আলোচনা করব।’
জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই বৈঠকের বিষয়ে সোমবার ১১টায় সময় মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে রোববার বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ ফের বেড়ে যাওয়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে যাচ্ছে- এমন গুজবে কান দেবেন না। শিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদান কার্যক্রম জোরেশোরে চলছে। সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে এসে কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করছি আমরা। তবে এটাও ঠিক, যদি মনে হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে সংক্রমণ বাড়বে, তখন আমরা বন্ধ করে দেব হয়তো।’
সাভারের আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদান কার্যক্রম জোরেশোরে চলছে। সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে এসে কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করছি আমরা। তবে এটাও ঠিক, যদি মনে হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে সংক্রমণ বাড়বে, তখন আমরা বন্ধ করে দেব হয়তো।
‘আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুরক্ষিত রেখে সংক্রমণ কীভাবে এড়াতে পারি। যারা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে বা হয়ে যাচ্ছে তারা গুজব ছড়াচ্ছেন। সব সময়ই এমন গুজব ছড়ানো হয়।
‘আপনারা গুজবে কান দেবেন না। যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতেই হয়, তখন আমরা ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেব। যতক্ষণ সে প্রয়োজন অনুভব না হবে, আমরা বন্ধ করব না। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যাক।’
করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং করোনাপ্রতিরোধী টিকা গ্রহণে উৎসাহী করার লক্ষ্যে মানুষের চলাফেরার ওপর এসব বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার।
এসব বিধিনিষেধের মধ্যে থাকছে- টিকার সার্টিফিকেট ছাড়া রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া, শপিং কমপ্লেক্সে যাওয়া এবং বিমান-ট্রেনে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা। টিকা ছাড়া বাণিজ্য মেলা, বইমেলার মতো জনসমাগমেও ঢুকতে দেয়া হবে না বলে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে। এমনকি টিকা ছাড়া ১২ বছরের বেশি বয়সী কোনো শিক্ষার্থীকে স্কুলে ঢুকতে দেয়া হবে না।