শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে গুলি, বোমা হামলা ও দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শরীয়তপুরে কর্মরত সাংবাদিকরা ওই মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), নড়িয়া, ডামুড্যা, গোসাইরহাট প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ও শরীয়তপুর ইলেকট্রনিক্স জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি অনল কুমার দে, সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবুল হোসেন, আবুল বাশার, সুজন-এর সাধারন সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন খান প্রমুখ।
নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৫ জানুয়ারি নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই ইউনিয়নের ৯টি ভোটকেন্দ্রের একটি ছিল ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ২২ নম্বর দুলুখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
নির্বাচনের দিন দুপুর সোয়া দুইটার দিকে ককটেল ফাটিয়ে ও গুলি করে কেন্দ্র দখল করার অভিযোগ ওঠে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ সময় বিদ্যালয় ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া হামলাকারীরা সাংবাদিকদের দুটিসহ সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার একটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেন।
হামলার সময় প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে ডেইলি ষ্টার প্রতিবেদক এমরুল হাসান বাপ্পী, নিউজবাংলার প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান, কালের কন্ঠের সাংবাদিক শরীফুল আলম ইমন, প্রথম আলোর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ ও মানবাধিকার খবরের সাংবাদিক হেমন্ত দাসকে অবরুদ্ধ করা হয়। এ সময় অবরুদ্ধ সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেলও ছোড়া হয়। এ ঘটনার জের ধরে পরে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
ভোজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী আলাউদ্দিন ছাড়াও ওই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক উন্মুক্ত থাকায় শহীদুল ইসলাম সিকদার, এমদাদ সিকদার, রুনা আক্তার, দেলোয়ার হোসেন ব্যাপারী ও এনামুল হক ব্যাপারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে তাদের মধ্যে আনারস প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন শহীদুল ইসলাম সিকদার।
সাংবাদিকদের ওপর ককটেল ও গুলি বর্ষণ এবং মটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় নির্বাচনের দিন রাতেই নড়িয়া থানায় একটি মামলা করেন কালের কণ্ঠের সাংবাদিক শরীফুল আলম।
মামলায় প্রার্থী দোলোয়ার হোসেন ব্যাপারী, তার জামাতা বিল্লাল চৌকিদার, রতন ছৈয়াল, ভোজেশ্বর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যন নুরুল হক ব্যাপারীর ছেলে ইমরান ব্যাপারী, সবুজ ব্যাপারী, বিপ্লব ব্যাপারীসহ ১৫ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শংকর কর জানান, সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।