তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দাবি করেছেন, তারা ছাত্রজীবনে মানুষের প্রয়োজন নিয়ে যেসব স্লোগান দিতেন, তার চেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে দেশে।
তিনি বলেন, ‘আগে আমরা মোটা চাল, মোটা কাপড়ের স্লোগান দিতাম। এখন রিকশাওয়ালা ভাইও মোটা চাল খায় না, মোটা চাল এখন গরুকে খাওয়ানো হয়। দিন বদলে গেছে।
‘নব্বই দশকের শ্লোগান ছিল শ্রমিকের মজুরি হতে হবে সাড়ে তিন কেজি চালের মূল্যের সমান। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকের মজুরি এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যে, শ্রমিক একদিনের মজুরি দিয়ে ১২-১৩ কেজি চাল কিনতে পারে। অর্থাৎ দিন বদল হয়েছে।’
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন ডাস চত্বরে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার কথা বলতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
‘এমডিজি ও এসডিজি সহ ভিশন ২০২১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ভিশন ২০৪১ এবং ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ অভিমুখে যাত্রার মাহেন্দ্রক্ষণে দিন বদলের মেলা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পোস্টার সাংস্কৃতিক সংসদ ও বজ্রকন্ঠ নামে একটি সংগঠন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আগে আমাদের দেশে ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ দেখা যেত। এখন ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ দেখা যায় না। ছেঁড়া কাপড় পরা কাউকে দেখা গেলে মানুষ তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে যে, সে আসলে ঠিক আছে কি না।
‘আজকে বাংলাদেশে কুঁড়ে ঘর নেই, আকাশ থেকেও কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া যায় না। এই ঘর শুধু কবিতায় আছে। তবে সেই ঘরে রান্না বান্না করা হয় বা লাকড়ি রাখা হয়।’
একটি বড় সময় পর আসলে মানুষের দেশ চিনতে কষ্ট হয় বলেও মনে করেন তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ’১২-১৩ বছর পর কেউ দেশে আসলে বিমান থেকে যখন কুড়িল ফ্লাইওভার দেখে, তখন সে ভেবে থাকে এটি তো ঢাকা নয়, বিমান ভুল করে মনে হয় ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর চলে এসেছে। এটিই হচ্ছে পরিবর্তন।’
তবে এই দিন বদল অনেকের পছন্দ নয় উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপি-জামাত লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার চালাচ্ছে। দেশকে এগিয়ে নিতে অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে।’
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপে না যাওয়ায় বিএনপির সমালোচনাও করেন হাছান। বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনে সংলাপের আয়োজন করেছেন। অথচ বিএনপি সংলাপে যাবে না, তারা সংলাপ নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। আসলে নির্বাচনকে বানচাল করাই তাদের উদ্দেশ্য। দেশের মানুষ তাদেরকে সে সুযোগ দেবে না।’
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামন বলেন, ‘দিন বদলের পর্বটি শুরু হয়েছিলো দুই ধাপে। প্রথম ধাপে জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত। তখনই মূলত সদ্য প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের দিন বদলের অনেকগুলো বীজ বপন করলেন।
‘দিন বদলের আরেকটি বীজ রোপন হয়েছিল ১৭ মে ১৯৮১, যেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা অনেক বাধাবিপত্তি মাথায় নিয়ে দেশে ফেরেন। আজকে যে বাংলাদেশকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি, যে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল, সেটা সম্ভব হতো না, যদি না বঙ্গবন্ধুকন্যা সেদিন দেশে ফেরে রাজনৈতিক নেতৃত্ব গ্রহণ না করতেন।’
আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, মেলার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার আলী আজগরও এ সময় বক্তব্য রাখেন।