নারায়ণগঞ্জের ভোটার হলে প্রধানমন্ত্রী তাকে ভোট দিতেন দাবি করা মেয়র প্রার্থী বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার এবার বলেছেন, আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রার্থী না হলে তাকে ভোট দিতেন। আর আইভীকে তিনি তার ভোটের প্রচারে নামাতেন।
আগামী ১৬ জানুয়ারির ভোট সামনে রেখে বন্দরনগরে চলা তুমুল প্রচারের মধ্যে রোববার এ কথা বলেন ভোটে দাঁড়িয়ে বিএনপির পদ হারানো তৈমূর।
নারায়ণগঞ্জে তৈমূর ও আইভীর মধ্যে প্রথম লড়াই হতে পারত ২০১১ সালে সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে। সে সময় দলীয় প্রতীকে ভোট ছিল না। আওয়ামী লীগের সমর্থন আইভীর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত নেতা শামীম ওসমান। দল কাউকে সমর্থন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর প্রার্থী হন দুজনেই। সে বছর বিএনপি সমর্থন দেয় তৈমূরকে।
ভোটের ডামাডোলে আইভী-শামীমের কাছে চাপা পড়ে যান তৈমূর। আর ভোটের আগের রাতে বিএনপি তাকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয়। সে বছর আইভীর এক লাখ ভোটের বেশি ব্যবধানে জয়ের পেছনে বিএনপির সরে দাঁড়ানোর ভূমিকা ছিল বলে ধারণা করা হয়।
২০১৬ সালে দলীয় প্রতীকের প্রথম নির্বাচনে বিএনপি তৈমূরের বদলে মার্কা তুলে দেয় সাখাওয়াত হোসেন খানের হাতে। তবে সুবিধা করতে পারেননি তিনিও। ৮০ হাজারের মতো ভোটে হেরে যান তিনি।
তৃতীয় নির্বাচনে এসে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবার আইভী। বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো ভোটে অংশ নেবে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে ভোট থেকে দূরে। তবে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি তৈমূরের পাশেই, যদিও এই ভোটে অংশ নেয়ায় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, নারায়ণগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক পদ এবং বিএনপিপন্থি আইনজীবী সমিতির পদ কেড়ে নেয়া হয়েছে তার।
নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ড মিশনপাড়া এলাকায় গণসংযোগ করার সময় বিএনপি নেতা বলেন, ‘আইভী যদি আজকে প্রার্থী না হতেন, তিনিই আমার নির্বাচনী পরিচালনার দায়িত্বে থাকতেন। তিনি আমাকে ভোট দিতেন। এ কথাটি সত্য না মিথ্যা, নারায়ণগঞ্জের জনসাধারণকে আপনারা (সাংবাদিক) জিজ্ঞাসা করবেন।’
আইভীকে তিনি তার নির্বাচন পরিচালনার কাজে লাগানোর ইচ্ছা পোষণ করার পর তার সমালোচনাও করেন তৈমূর। বলেন, ‘আইভী শুধু সরকারি দলকেই বিতর্কিত করেন নাই, তিনি আমার নেত্রী সম্পর্কেও অনেক খারাপ কথা বলেছেন।
‘তিনি বলেছেন দুই নেত্রী বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি সংবাদ সম্মেলন করে তারিখ বাই তারিখ বলব। বাংলাদেশে তো দুজনই নেত্রী আছেন। দুজনই প্রধানমন্ত্রী। তার মধ্যে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এ দুজন সম্পর্কে তিনি যখন ছাড় দেন নাই, তিনি আমাকে বা অন্য কাউকে ছাড় দেবেন এটা আমার কাছে মনে হয় না।
‘একজন সাবেক মেয়র হিসেবে তার বক্তব্য আরও সাবলীল কিংবা বিতর্ক সৃষ্টি করে না, এমন বক্তব্য দেয়া উচিত।‘
শামীম ওসমানকে আইভীর গডফাদার বলার প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার নিজ দলের এমপিকে গডফাদার বলছেন। অতএব বিষয়টি তাদের নিজস্ব দলীয় ব্যাপার।’