ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুই গারো কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে অংশ নেয় ছয়জন। এ সময় তাদের পাহারায় ছিল চারজন। স্থানীয় বখাটে সোলায়মান হোসেন রিয়াদের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) অভিযুক্ত রিয়াদকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানায়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আলোচিত এ সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল ধর্ষণের শিকার দুই কিশোরী। সেখানেই ছিলেন রিয়াদসহ অন্য আসামিরা। অনুষ্ঠান থেকে দুই কিশোরী ও ১০ বছর বয়সী এক শিশু হেঁটে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় রিয়াদের নেতৃত্বে গ্রুপটি তাদের পিছু নেয়। একটি বাগানের ভেতর নিয়ে দুই কিশোরীকে ধর্ষণে অংশ নেন রিয়াদসহ ছয়জন। এ গ্রুপের চারজন তখন পাহারা দেন। কিশোরীদের সঙ্গে থাকা শিশু পালিয়ে রক্ষা পায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াদ এসব তথ্য দেন।
দুই গারো কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামিসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে হালুয়াঘাটের কাটাবাড়ী এলাকায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় স্কুলপড়ুয়া গারো সম্প্রদায়ের দুই কিশোরী। এ ঘটনায় এক কিশোরীর বাবা ৩০ ডিসেম্বর মামলা করেন। আসামি করা হয় ১০ জনকে।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বসহকারে প্রচার হলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধনসহ প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই একপর্যায়ে র্যাব-১৪ শুক্রবার রাতে গফরগাঁও থেকে প্রধান অভিযুক্ত সোলায়মান হোসেন রিয়াদকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর থেকে রিয়াদ একটি মালবাহী ট্রাকে উঠে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছিলেন। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পৌঁছে তিনি র্যাবের হাতে ধরা পড়েন।রিয়াদ নিজ এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। এলাকায় তার ১০-১২ জনের একটি গ্রুপ আছে। স্কুলপড়ুয়া মেয়েরা তাদের বখাটেপনায় শিকার। রিয়াদের নামে হালুয়াঘাট থানায় মাদক মামলা আছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এর আগে জেলেও ছিলেন।
দুই গারো কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামিসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন সোলায়মান হোসেন রিয়াদ, শরিফ মিয়া, মিজানুর রহমান, মিয়া হোসেন, রুকন মিয়া ও আবদুল হামিদ। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি চারজন।
হালুয়াঘাট উপজেলার গাজীরভিটা ইউনিয়নে গত ২৮ ডিসেম্বর একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যায় দুই প্রতিবেশী কিশোরী। রাতে ফেরার পথে কয়েকজন তাদের তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। পরদিন পরিবারের সদস্যরা ঘটনাটি জানতে পারেন।