লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থানায় যুবকের মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দুষছেন স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে ওই যুবককে। নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন তারা। তবে পুলিশ বলছে, জিজ্ঞাসাবাদের ফাঁকে, জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ইন্টারনেটের তার পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ওই যুবক।
মৃত যুবকের নাম হিমাংশু বর্মণ। তার বাড়ি উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের মালদাপাড়া গ্রামে। ৩২ বছরের হিমাংশু স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে কাজ করতেন।
পুলিশের ভাষ্য, শুক্রবার ভোরে হিমাংশুর স্ত্রী সাবিত্রী রানীর মরদেহ উঠানে পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। তিনি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। স্থানীয়দের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেন তিনি। খবর দেয়া হয় পুলিশে।
সুরতহাল শেষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সকালে হিমাংশু, তার ১৩ বছরের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা ও হিমাংশুর চাচা খগেনকে থানায় ডাকে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ। বিকেলে থানা হেফাজতে আত্মহত্যা করেন হিমাংশু।
পুলিশের দাবি মেনে নিতে পারছেন না হিমাংশুর স্বজনরা। তাদের অভিযোগ, হত্যা করা হয়েছে হিমাংশুকে।
হিমাংশুর ভাই সুধীর কুমার বলেন, ‘হত্যা সন্দেহে আমার ভাইকে থানায় নেয়া হয়েছিল। রাতে জানায় সেখানে সে আত্মহত্যা করেছে। এটা কীভাবে সম্ভব? হত্যায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদে থাকা ব্যক্তিকে একা ফেলে পুলিশ কীভাবে চলে যায়? এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’
- আরও পড়ুন: পুলিশি হেফাজতে যুবকের মৃত্যু
হাতীবান্ধা উপজেলা বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি কেশব চন্দ্র বলেন, ‘পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। একই দিনে দুজনের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তাদের দুটি সন্তান আছে। ওদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।’
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হিমাংশুর মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তার স্ত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্তও শেষ। রংপুর থেকে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। একসঙ্গেই দুজনকে দাহ করা হবে।’
হিমাংশুর মৃত্যু নিয়ে তার স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে ওসি এরশাদুল বলেন, ‘এসব আমরা কিছু জানি না। তার মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর ভাই খগেন চন্দ্র একটি হত্যা মামলা করেছেন। এতে মৃত হিমাংশুর নাম উল্লেখ করে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।’