নারীর সঙ্গে ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম লিটন। তিনি সিআইপি লিটন নামেই অধিক পরিচিত।
ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় দল থেকে তার বহিষ্কার চেয়ে ইতিমধ্যেই একটি লিখিত আবেদনও করা হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবর সেই আবেদনটিতে স্বাক্ষর করেছেন রাজাপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা।
আবেদনপত্রে বলা করা হয়েছে, রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ৯ নম্বর সহসভাপতি রফিকুল এক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের সময় নিজস্ব লোক দিয়ে তা ভিডিও করে রাখেন। ওই ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে এবং দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি লিটনের বিরুদ্ধে অভিযোগটি গ্রহণ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।
তথ্যটি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পৌর প্যানেল মেয়র তরুণ কর্মকার বলেন, ‘সরকারের সিআইপি পদকপ্রাপ্ত এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে লিটনের এমন কর্মকাণ্ড সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে আবেদনকারীরা মনে করেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে আগামী সভায় আলোচনা করব এবং অ্যাকশনে যাব।’
রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়া হায়দার খান লিটন বলেন, ‘ভিডিওটি দেশের বাইরের হওয়ায় ভিকটিমের পক্ষ থেকে আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। কারও অপকর্মের দায়িত্ব দল নেবে না। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, ভিডিওটি উপজেলার সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত মেসেঞ্জার, ইমো ও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝেও তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পোস্টার ও লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে লিটনের বাড়ি উপজেলার পুটিয়াখালী গ্রামেও সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। সে সময় লিটনের বড় ভাই ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন প্রতিপক্ষ সাবেক ইউপি সদস্য মো. ফারুক মোল্লাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন।
সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনাবাসী বাংলাদেশি ক্যাটাগরিতে ও বাণিজ্যিক মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি অধিদপ্তর কর্তৃক কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে সিআইপি মর্যাদা লাভ করেন লিটন। রাজধানীর মতিঝিলে নাহার ম্যানসনের পঞ্চম তলায় ‘লিটন ওয়ার্ল্ড লিংক’-এর মালিক তিনি।
বিষয়টি নিয়ে লিটনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বড় ভাই ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘লিটন রাজনীতিতে আগাইয়া গেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে পারে এমন সংবাদে তার বিরোধী পক্ষ বর্তমান এমপি সাহেব, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনির, ভাইস চেয়ারম্যান আফরেজা আক্তার লাইজুর সমর্থকরা তার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’