ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের (আইআইএম) শিক্ষার্থী এবং ফ্যাকাল্টি সদস্যদের একটি দল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেশে ঘৃণাত্মক বক্তব্য ও বর্ণভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলার অনুরোধ জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লেখা খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেছেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা ঘৃণা-ভরা কণ্ঠকে উৎসাহিত করছে।
চিঠিতে ১৮৩ জন স্বাক্ষর করেছেন, যাদের মধ্যে আইআইএম-আহমেদাবাদ এবং আইআইএম-বেঙ্গালুরুর ১৩ জন ফ্যাকাল্টি সদস্য ও শিক্ষার্থী রয়েছেন। আইআইএম ব্যাঙ্গালোরের পাঁচজন ফ্যাকাল্টি সদস্য চিঠির খসড়া তৈরি করেছেন। তারা হলেন- প্রতীক রাজ (স্ট্র্যাটেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক); দীপক মালঘান (সহযোগী অধ্যাপক, পাবলিক পলিসি), ডালহিয়া মণি (সহযোগী অধ্যাপক, এন্টারপ্রেনিওরশিপ ); রাজলক্ষ্মী ভি মূর্তি (সহযোগী অধ্যাপক, ডিসিশন সায়েন্স) এবং হেমা স্বামীনাথন (সহযোগী অধ্যাপক, পাবলিক পলিসি)। মালঘান একজন বিশিষ্ট পরিবেশগত অর্থনীতিবিদ।
সহকারী অধ্যাপক প্রতীক রাজ বলেছেন, “নীরবতা আর বিকল্প ছিল না’ বুঝতে পেরে একদল ছাত্র ও শিক্ষক এই চিঠি লেখার উদ্যোগ নিয়েছিল। অনেক দীর্ঘ সময় ধরে, মূলধারার আলোচনা বা নিবন্ধ ঘৃণার কণ্ঠকে প্রান্তিক বিষয় হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছে। আর এভাবেই আমরা আজ এখানে এসে পৌঁছেছি।”
ছাত্র ও শিক্ষকরা তাদের চিঠিতে বলেছেন, ‘আপনার নীরবতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ঘৃণাভরা কণ্ঠকে উৎসাহিত করে এবং আমাদের দেশের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলে। আমাদেরকে বিভক্ত করতে চায় এমন শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর জন্য আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি।’
চিঠিটি সাম্প্রতিক হরিদ্বার ‘ধর্ম সংসদ’ ইভেন্টের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা হয়েছে, যেখানে কিছু হিন্দু ধর্মীয় নেতা নাগরিকদের প্রতি মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেয়া এবং গণহত্যার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ধর্ম/বর্ণ পরিচয়ের ভিত্তিতে সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য বক্তব্য ও সহিংসতার আহ্বান গ্রহণযোগ্য নয়।’
স্বাক্ষরকারীরা বলেছিলেন যে, যদিও ভারতীয় সংবিধান মর্যাদা সহকারে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে; তবুও দেশে ভয়ের অনুভূতি রয়েছে।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের দেশে এখন ভয়ের অনুভূতি রয়েছে- সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গির্জাসহ উপাসনালয়গুলো ভাঙচুর করা হচ্ছে এবং আমাদের মুসলিম ভাই ও বোনদের বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এসবই সংঘটিত হচ্ছে দায় থেকে মুক্তির আশ্বাস এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার অবর্তমানে তৈরি হওয়া অসামাজিক মানসিকতার জন্য।’