গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামি নূর হোসেনের কাছে কীভাবে মোবাইল ফোন গেল, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নিউজবাংলাকে শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার আব্দুল জলিল।
তিনি জানান, কারাগারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক উম্মে সালমাকে প্রধান করে তিন সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১১ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
এর আগে কনডেম সেল থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে কারা কর্তৃপক্ষ। সেটি নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুন মামলায় ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামি সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ব্যবহার করতেন বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
জেল সুপার আব্দুল জলিল বলেন, ‘নূর হোসেনের সঙ্গে একই সেলে আরও দুই বন্দি রয়েছেন। সেখানে তিনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন বলে আমরা জানতে পারি। পরে তার কনডেম সেলে গত ৫ জানুয়ারি অভিযান চালানো হয়।
‘এ সময় ওই কনডেম সেল থেকে একটি মিনি বাটন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা বিচারাধীন।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ১৬ জানুয়ারি। এই নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন নূর হোসেনের ছোট ভাই নূর উদ্দিন এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভাতিজা শাহ জালাল বাদল।
অপহরণের পর হত্যা করা হয় এই সাতজনকে
নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে- এই প্রশ্নে জেল সুপার বলেন, ‘কারাগারে মোবাইল ব্যবহারের অপরাধে তার বিরুদ্ধে কারাবিধি আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কীভাবে কারাগারের ভেতর মোবাইল নেয়া হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। এর তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়।
হত্যার প্রায় তিন বছর পর বিচারিক আদলতে এই মামলার রায় হয়। রায়ে সাত খুন মামলায় নূর হোসেন, সাবেক র্যাব অধিনায়ক তারেক সাঈদসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত।
হাইকোর্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। তাদের মধ্যে নূর ও তারেক সাঈদ রয়েছেন।