জেলার ৫৮টি ইউনিয়নের অর্ধেকের নেই নিজস্ব ভবন। ছোট কক্ষে জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকমে চলে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। তাতে ইউনিয়নবাসীর ঠিকমতো সেবা দেয়া কঠিন। বারবার আবেদন করে লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।
সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় যে ছোট একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে কাজকর্ম চালায়, তাতেই গাদাগাদি করে বসাতে হয় গ্রাম আদালত। চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যদের আলাদা কক্ষে বসার কথা থাকলেও একই কক্ষে সবাই বসছেন। অফিসের দরজা-জানালাও ভাঙা।
স্থায়ী কোনো অফিস না থাকায় যেখানে-সেখানে বসে কাজ করেন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। ছবি: নিউজবাংলা
উপজেলার চর রমনীমোহন ইউনিয়ন পরিষদ বসছে চেয়ারম্যানের নিজ বাসার একটি কক্ষে। একই অবস্থা চর রুহিতা, কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ, চর লরেন্স, বড়খেরী, শাকচরসহ ২৭টি ইউনিয়ন পরিষদে। বেশির ভাগ জায়গায় ভাড়া নিয়ে ছোট এক কক্ষে কাজ চলছে। সেই কক্ষগুলোরও করুণ হাল। অনেক ইউপি কার্যালয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যায়।
লক্ষ্মীপুরে পাঁচটি উপজেলায় বসবাস করছে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ। এসব উপজেলায় ৫৮টি ইউনিয়ন পরিষদ। সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টিতে নেই নিজস্ব ভবন। এ ছাড়া অন্য চারটি উপজেলায় ১৮টিসহ ২৭টিতে ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নেই।
চর লরেন্স ইউনিয়নের বাসিন্দা ডা. মামুনুর রশিদ ও জসিম উদ্দিন, দালাল বাজার এলাকার মাসুদ আলম, নুরুজ্জামানসহ অনেকে জানান, অনেক সময় অফিস না থাকায় চেয়ারম্যান ও সদস্যরা একেকজন বসছেন একেক জায়গায়। জনপ্রতিনিধিদের একসঙ্গে পাওয়া যায় না।
জন্ম সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ভোটার আইডি কার্ড, মৃত্যু সনদ ও ওয়ারিশি সনদসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতে আসা সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। সেবা নিতে আসা লোকজনের বসার জায়গা নেই, টয়লেট নেই।
অনেক ইউপি কার্যালয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যায়। ছবি: নিউজবাংলা
চর লরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন মাস্টার ও দালাল বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান সোহেল জানান, কোথাও ভাড়া বাসা ও কোথাও নিজ বাসায় ইউনিয়ন পরিষদের অফিস করছেন জনপ্রতিনিধিরা। আবেদন করা হয়েছে। এখনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিশেষ করে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তা ছাড়া অফিসের কোনো নিরাপত্তা থাকে না। অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র বাসায় নিয়ে রাখা হয়।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ‘ভবন করতে যে পরিমাণ জমি প্রয়োজন, তা পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের জন্য মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়ন পরিষদেরই কার্যালয় নির্মাণ করা হবে।’