করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ কি দেশে চলেই এলো- এমন প্রশ্নের মধ্যে গত ২১ সেপ্টেম্বরের পর প্রথমবারের মতো পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেল।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারা দেশে যত মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ল।
শনাক্তের হার গত ১৬ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। সেদিন পরীক্ষার বিপরীতে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ সংক্রমণের সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের বেশি থেকে এর নিচে নেমে এলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ধরা হয়। উল্টোপথে যাত্রা অর্থাৎ সংক্রমণের হার ৫-এর নিচে থেকে ৫ ছাড়ালে পরবর্তী ঢেউ আঘাত হেনেছে ধরা হয়।
তবে এক দিনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না। পরপর দুই সপ্তাহ যদি সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের বেশি বা কম থাকে, তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বা পরবর্তী ঢেউ আঘাত হেনেছে বলে ধরা হয়।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর।
এর পর থেকে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ক্রমেই কমছিল। একপর্যায়ে ২ শতাংশের নিচে নেমে ১ শতাংশের কাছাকাছি চলে আসে। তবে শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের হার ক্রমে বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ২ ছাড়িয়ে ৩ এবং চলতি সপ্তাহে ৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
বৃহস্পতিবারও পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বুধবার পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, মঙ্গলবার ছিল ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কেবল শনাক্তের হার নয়, ২৪ ঘণ্টায় রোগীর সংখ্যাও গত ২২ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৪৬ জন নতুন রোগী। এর চেয়ে বেশি ১ হাজার ৩৭৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ২২ সেপ্টেম্বর।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৫২টি ল্যাবে ২০ হাজার ২০৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যা ১৬ সেপ্টেম্বর মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
এ নিয়ে দেশে এই পর্যন্ত করোনা ধরা পড়েছে ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৯৩ জনের দেহে।
রোগীর সংখ্যা বাড়লেও মৃত্যু কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কেবল একজনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছে। সে একজন শিশু বলে জানানো হয়েছে, যার বাড়ি ময়মনসিংহ। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল সে।
আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছিল সাতজন।
এ নিয়ে দেশে করোনায় মারা গেছেন মোট ২৮ হাজার ৯৮ জন।