দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্তের হার প্রতিদিনই বাড়ছে। শুক্রবার পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশ ছাড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরুর শঙ্কার কথা জানালেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রতি অনেকের মাঝে অনীহা দেখা গেছে। পূর্বাচলে শুরু হওয়া এবারের বাণিজ্য মেলায় খুব কমসংখ্যক ক্রেতা-দর্শনার্থীই মানছেন স্বাস্থ্যবিধি। অনীহা দেখাচ্ছেন বিক্রেতারাও । কারও মাস্ক পকেটে, তো কারও ঝুলছে গলায়।
স্বাস্থ্যবিধি মানতে মাইকে চলছে কর্তৃপক্ষের আহ্বান। তবে এ আহ্বান মানছেন না কেউই।
মেলার মূল গেটে কর্মীরা মাস্ক পরতে বললেও তাদের কথা শুনছেন না বেশির ভাগ দর্শনার্থী। কর্মীরা কাউকে আটকে দিলে পকেট বা ব্যাগ থেকে মাস্ক বের করে কোনো রকমে পরছেন। কিন্তু মেলার ভেতর ঢুকলেই মাস্ক চলে যাচ্ছে আগের জায়গায়।
গেটে দায়িত্বরত কর্মী সোহেল বলেন, ‘মাস্ক ছাড়া কেউ মেলায় যেতে পারবে না বলে নির্দেশ দেয়া আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আমরা সবাইকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিচ্ছি। মূল গেটের বাইরে অনেকেই মাস্ক বিক্রি করছেন। সেখান থেকে কিনে মেলার ভেতর যাচ্ছেন কেউ কেউ। মাস্ক ফ্রিও দিচ্ছি আমরা।’
তবে অভিযোগ রয়েছে, ফ্রি মাস্কের বিনিময়ে আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা করে।
এ বিষয়ে কর্মী সোহেল বলেন, ‘ফ্রি মাস্কগুলো শেষ হয়ে গেছে। এ জন্য বাইরে থেকে এনে দেয়া হচ্ছে।’
হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেয়ার ক্ষেত্রেও খুব একটা তৎপরতা দেখা যায়নি। কিছুক্ষণ পরপর একজনের হাতে স্যানিটাইজার দিচ্ছেন কর্মীরা।
এদিকে গেট পার হয়ে ভেতরে ঢুকেই দর্শনার্থীদের কেউ কেউ মাস্ক খুলে রাখছেন। মেতে উঠছেন ছবি তোলা আর আড্ডায়।
বাণিজ্য মেলায় মাস্ক না পরেই ঘুরছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা
মাস্ক কোথায় জানতে চাইলে এক দর্শনার্থী পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরেন। বলেন, ‘বাসে আসার সময় প্রচুর গরম লেগেছে। তাই মেলার ভেতর ঢুকে মাস্ক পকেটে রেখেছিলাম।’
মেলার স্থায়ী কমপ্লেক্স বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের ভেতরে স্টলগুলোতেও দর্শনার্থীদের মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। মাস্ক ছিল না বেশির ভাগ বিক্রেতার মুখেও।
মেলার মূল ভবনের পূর্ব পাশের গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই সামনে কে কে জুয়েলার্স। এখানকার পাঁচ বিক্রেতার কাউকেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। একজনের মাস্ক আছে, তবে গলায় ঝোলানো।
জানতে চাইলে বিক্রেতা সুমন বলেন, ‘মাস্ক তো আছে, গলায়। আসলে মুখে মাস্ক থাকলে কাস্টমারদের ঠিকমতো কথা বুঝিয়ে বলা যায় না। তাই খুলে রাখি।’মেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাতে চেষ্টা করছি। প্রবেশপথে প্রত্যেক দর্শনার্থীকে স্যানিটাইজার দেয়া হচ্ছে। যাদের মাস্ক নেই, তাদের বিনা মূল্যে মাস্ক দেয়া হচ্ছে। তবে বিনা মূল্যে মাস্ক দেখলে অনেকেই নিজের মাস্ক লুকিয়ে ফ্রি মাস্কের জন্য আসেন। এ জন্য বেছে বেছে দেয়া হচ্ছে।
‘স্বাস্থ্যবিধি মানতে সব সময় মাইকে প্রচার চলছে। গেটে মানুষকে চেক করা হচ্ছে। এ ছাড়া মেলার ভেতর আমাদের টিম সব সময় সতর্ক করছে। তার পরও অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। আমরা বিক্রেতাদেরও মাস্ক পরার কড়া নির্দেশ দিয়েছি।’