চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় সুফিয়া খাতুন নামের গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। যৌতুকের টাকা না দেয়ায় জাকিরুল ইসলাম স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
৩২ বছর বয়সী সুফিয়া দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি জাকিরুলের স্ত্রী।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সুফিয়ার মা আছিয়া খাতুন বলেন, ‘২০০৪ সালে জুড়ানপুর গ্রামের মাদ্রাসাপাড়ার নিজাম উদ্দিনের ছেলে জাকিরুল ইসলামের সঙ্গে সুফিয়ার বিয়ে হয়। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুক দাবি করে আসছে জাকিরুল। আমরা দফায় দফায় বেশ কিছু টাকা দিয়েছি। তারপর সে আরও টাকা দাবি করে।
‘এ নিয়ে সে প্রায়ই আমার মেয়েকে মারধর করে। একবার আমার মেয়ে অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তখন সে বেঁচে যায়। দেড় বছর আগে জাকিরুল আবার বিয়ে করে। সেই সংসারেও শুরু হয় অশান্তি। একপর্যায় জাকিরুলের দ্বিতীয় স্ত্রী চলে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবারও যৌতুকের টাকা দাবি করে ২৮ ডিসেম্বর সুফিয়াকে মারধর করে একটি দাঁত ভেঙে দেয় জাকিরুল। তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরে সে। বাড়িতেই চলছিল চিকিৎসা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আবার তাকে মারধর করা হয়।
‘রাত আড়াইটার দিকে জাকিরুল কবিরাজ আনে সুফিয়ার চিকিৎসা করাতে। সকালে শুনি, আমার মেয়ে মারা গেছে। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীর ফুলে গেছে। তাকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোকলেছুর রহমানের সহযোগিতায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানান আছিয়া খাতুন।
এ বিষয়ে জাকিরুল বলেন, ‘আমার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তার চিকিৎসা চলছিল। আমি তাকে হত্যা করিনি। বিষয়টি মিথ্যা।’
পুলিশ জানায়, বেলা সাড়ে ১১টায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত জাকিরুলকে আটক করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি ধামাচাপা দিচ্ছি না। আমিও চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার হোক।’
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, মরদেহ হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।