বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় সরকারের প্রস্তাব গণফ্রন্টের

  •    
  • ৬ জানুয়ারি, ২০২২ ২৩:১৮

গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘১৯৭১ সালের পর সংসদ নির্বাচনে যেসব রাজনৈতিক দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল, সেসব দলের সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। তবে বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন বাদে জাতীয় সরকারের প্রধান থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।’

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে গণফ্রন্ট।

বঙ্গভবনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন। তবে এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নাম নির্দিষ্ট করেননি তিনি।

তিনি আরও জানান, স্বাধীনতার পর যেসব রাজনৈতিক দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল, সেসব দলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। এ ছাড়া ১৪ দফা প্রস্তাবের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন গঠনে ৫ সদস্যের নাম প্রস্তাব করেছে দলটি।

জাকির হোসেন বলেন, ‘১৯৭১ সালের পর সংসদ নির্বাচনে যেসব রাজনৈতিক দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল, সেসব দলের সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। তবে বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন বাদে জাতীয় সরকারের প্রধান থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।’

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তা গত ২০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে।

এর আগে সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে প্রবেশ করে।

সংলাপে অংশগ্রহণকারী দলটির নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলের কার্যকরী চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আকমল হোসেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য কনিকা মাহফুজ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আজমল হোসেন, মহাসচিব আহমেদ আলী শেখ, অতিরিক্ত মহাসচিব উম্মে সালমা ও মহিলাবিষয়ক উপদেষ্টা ওবাইদা হক।

তিনি বলেন, ‘গত সংলাপেও গণফ্রন্টের এমন প্রস্তাব ছিল।’ গণফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বলেছি ১৯৮৬, ’৮৮ কিংবা ’৯৬ সালের মতো আমরা বিতর্কিত নির্বাচন চাই না। আমরা চাই ভালো নির্বাচন হোক।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, যে নির্বাচন কমিশনকে আপগ্রেড করতে হবে। আমরা মনে করি, কমিশনের ব্রিগেডিয়ার পদমর্যাদার কাউকে পদায়ন করা হলে কমিশন আপগ্রেড হবে না।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে মেজর জেনারেল লেভেলের কাউকে দিতে পারেন। নির্বাচন কমিশন অপগ্রেট হলে সিদ্ধান্ত দিতে তারা সাহস পাবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই প্রস্তাবটি সম্পর্কে বলেছেন ভাল প্রস্তাব।’

গণফ্রন্ট চেয়ারম্যান দাবি নির্বাচন কমিশনে থাকবেন মোট ৯ জন। এর মধ্যে তিনজন নারী থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করেছি ৯ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা যেতে পারে। ৩ জন নারী কমিশনার নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন বলে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি কেউ করতে পারেনি কিন্তু গণফ্রন্ট নিশ্চিত করতে পেরেছে।’

অবশ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দলটি যে পাঁচজনের নাম প্রস্তাব করেছে সেখানে কোনো নারী নেই। দলটি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নাম প্রস্তাব করেছে সাবেক প্রধান বিচারপতি ফজলুল করিম চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌফিক হোসেন, সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার, সচিব মর্তুজা হোসেন মুন্সি, মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান।

‘আপনাদের প্রস্তাবের বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কি বলেছেন সাংবাদিকরা জানতে চাইলে গণফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, আমরা যে প্রস্তাব করেছি যে দেশের বাইরে যাদের অর্থ রয়েছে এমন কাউকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না। সে প্রস্তাবকে রাষ্ট্রপতি ভালো বলেছেন। উনি আমাদের আরও কয়েকটি বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।’

গণফ্রন্টের ১৪ দফা প্রস্তাব

১. নির্বাচন কমিশন গঠনে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং কমিশনকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। সকল মহলকে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে হবে।

২. গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত এবং সুসংহত করার লক্ষ্যে সৎ, দুর্নীতিমুক্ত, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।

৩. প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত হতে পারেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি অথবা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে উপযুক্ত ব্যক্তি।

৪. নির্বাচন কমিশন হাইকোর্টের সাবেক সিনিয়র বিচারপতি, সাবেক সিনিয়র সচিব, অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী প্রধান, নৌ বাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান অথবা সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদার ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে।

৫. নয় সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা যেতে পারে এবং ৩ জন মহিলা কমিশনার নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।

৬. প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের বয়সের একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা নির্ধারণ করতে হবে।

৭. নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ প্রাপ্তদের সম্পদ বিবরণী প্রতি বছর জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।

৮. বিদেশী নাগরিকত্ব আছে এমন কাউকে নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।

৯. দেশের বাহিরে অবৈধ উপায়ে অর্পিত নামে অথবা বেনামে কোন সমান থাকলে তাকে নি কমিশনে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

১০. একটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় অর্থ এবং লোকবলের যোগান দিতে হবে।

১১. সরকার নির্বাচনে যাতে কোন হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য সুস্পষ্ট ঘোষণা থাকতে হবে।

১২. বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সংলাপে অংশগ্রহণকারী নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো ‘নির্বাচন কমিশন’ গঠনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট ব্যক্তিবর্গের নামের যে প্রস্তাব দিবেন, তাদের মধ্যে যাদের নাম বেশীরভাগ রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবনায় থাকবে, তারাই নির্বাচন কমিশনে যাবেন বলে আশা করি। এতে সংলাপ এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দানকারীদের বক্তব্য বিফলে যাবে।

১৩. সংলাপ বর্জন করলেই সমস্যার সমাধান হবে না। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে দুর্নীতিবাজদের বাদ দিয়ে সমঝোতা অপরিহার্য।

১৪. নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। ১৯৭১ সালের পর সংসদ নির্বাচনে যেসব রাজনৈতিক দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব ছিল, সেসব দলের সমন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হতে পারে। তবে বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন বাদে জাতীয় সরকারের প্রধান থাকবেন বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

এ বিভাগের আরো খবর