তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো ধানের জন্য তৈরি করা বীজতলা নিয়ে শঙ্কিত ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা।
কৃষকরা জানিয়েছেন, ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে বোরোর বীজতলার গাছগুলো ফ্যাকাশে রং ধারণ করেছে। কোল্ড ইনজুরিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে চারাগুলো।
এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের কপালে।
নিউজবাংলাকে কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘ভালো ফসল পেতে ভালো বীজ বা ভালো মানের চারা গাছের বিকল্প নেই। তাই বোরো চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করে পরিচর্যার কমতি রাখছি না।
‘কিন্তু চারা গাছ একটু বড় হতে না হতেই ঘন কুয়াশার কবলে পড়েছে বোরো ধানের বীজতলা। এতে বীজতলার চারা গাছ ফ্যাকাশে রং ধারণ করেছে। কোল্ড ইনজুরিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চারা দিন দিন হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।’
কৃষক আতাউর রহমান গনি বলেন, ‘কুয়াশার কারণে বোরো ধানের চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হয়, এতে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।
‘শীতের কারণে বাড়ি থেকে কেউ বের হতে চায় না। তাই শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে খুব দুর্ভোগে পড়েছি।’
বদিউল আলম নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করতে প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়। আর বিক্রির সময় ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারি না।
‘এখন তো কুয়াশা আর শীতের কারণে উৎপাদন নিয়ে শঙ্কিত আমরা।’
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৯১৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ২ হাজার ৭৯২ হেক্টর জমিতে বীজতলা বপন করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শীতের কারণে বোরো ধানের চারার ক্ষতির ব্যাপারে আমরা কৃষকদের পলিথিন দিয়ে চারা ঢেকে রাখার জন্য বলেছি। এ ছাড়া জিপসাম প্রয়োগ, বীজতলায় প্রতিদিন পুরোনো পানি অপসারণ করে নতুন পানি দেয়াসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।’
বিগত কয়েক দিন ধরে কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ হলেও এখন পর্যন্ত বেশি ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি।
তবে শীত ও কুয়াশার তীব্রতা বাড়লে পরিস্থিতি অনুকূলের বাইরে চলে যেতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে আবু হোসেন বলেন, ‘আশা করছি এই আবহাওয়া ঠিক হয়ে যাবে এবং অচিরেই রোপণ কাজ সম্পন্ন হবে।’