দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে মানুষের চলাফেরার ওপর ফের বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। বলা হয়েছে, টিকা ছাড়া ১২ বছর বয়সী কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে যেতে পারবে না। খেতে যাওয়া যাবে না রেস্টুরেন্টে; ভ্রমণ করা যাবে না বিমান-ট্রেনে।
টিকা নেয়া ছাড়া বাণিজ্য মেলা, বইমেলা যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়াসহ দু-এক দিনের মধ্যে চলাফেরায় আরও কিছু বিধিনিষেধের নির্দেশনা আরোপের সার্কুলার আসছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিয়েছে যে ভ্যাকসিন ছাড়া ১২ বছরের ওপরে কেউ স্কুলে আসতে পারবে না।
‘ভ্যাকসিন তো এখন গ্রামগঞ্জ পর্যন্ত আমাদের এভেইলেবল আছে। সে জন্যই এটা ইমপোজ করে দেয়া হয়েছে। ভ্যাকসিনে গিয়ে যদি স্কুলে যাওয়া ইজি হয় তাহলে সেটাই সবাই কামনা করে।’
তিনি বলেন, ‘টিকা না নিয়ে কেউ স্কুলে যেতে পারবে না। অন্তত পক্ষে ফার্স্ট ডোজ নিতে হবে। ১২ বছরের নিচে এখনও কাউন্টে আসেনি আমাদের দেশে। বাচ্চাদের নিবন্ধনেরও প্রয়োজন নেই। তারা বার্থ সার্টিফিকেট বা যেকোনো একটি সার্টিফিকেট নিয়ে গেলেই টিকা পেয়ে যাবে।’
টিকা নেয়ার সার্টিফিকেট ছাড়া রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া, শপিং কমপ্লেক্সে যাওয়া এবং বিমান-ট্রেনে ভ্রমণ করা যাবে না বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি আরও বলেন, বাড়ির বাইরে মাস্ক ছাড়া বের হওয়া যাবে না। কোভিড সংক্রমণ আরও বাড়লে গণপরিবহনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের সিদ্ধান্ত হবে। তবে ভাড়া বাড়ানো যাবে না। রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সীমিত জনসমাগম করতে হবে।
নির্দেশনায় এর বাইরেও আরও কিছু বিধিনিষেধে থাকবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং করোনাপ্রতিরোধী টিকা গ্রহণে উৎসাহী করার লক্ষ্যে মানুষের চলাফেরার ওপর এসব বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহ নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে সে দেশের করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে ধরা হয়। সে হিসাবে দেশে করোনা সংক্রমণ হার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলেও ফের মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত কিছু দিন ধরেই শনাক্ত সংখ্যা ও হার বাড়তির দিকে। ২৪ ঘণ্টার হিসাবে বুধবার করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮৯২ জনের দেহে, যা গত ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এদিন শনাক্তের হার ছিল হার ৪ দশমিক ২০, যা ২৮ সেপ্টেম্বরের পর সবচেয়ে বেশি।
এর মধ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনও দেশে শনাক্ত হয়েছে। এই ধরন অনেক বেশি সংক্রামক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই করোনার নতুন ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আগেভাগেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সরকার।