বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্রে গণনা চলাকালে সংঘর্ষে গুলিতে চারজন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে গাবতলীতে ভোটের সহিংসতায় বুধবার প্রাণ গেল পাঁচজনের।
বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গণনার সময় বিকালে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয়রা জানান, গণনা না করেই ব্যালট নিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়। তখন বিজিবির গুলি চালালে এই প্রাণহানি হয়।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম প্রাণহানির ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা চারজনের পরিচয় জানিয়েছেন। তারা হলেন, কুলসুম আক্তার, আলমগীর হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুর রশিদ। চারজনেরই বাড়ি কালাইহাটা গ্রামে।
এ ঘটনায় আরও তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে। তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
তাদের মধ্যে একজন মো. আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘৫টার দিকে ভোট গণনা না করে ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়ার কথা শোনা যায়। এ সময় এক প্রার্থীর সমর্থকরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। এর কিছু পরেই হঠাৎ দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। তখন বিজিবি সদস্যরা গুলি শুরু করলে আমার গায়ে লাগে। আমি এরপর আর কিছু বলতে পারি না।’
ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউনুছ আলী মণ্ডল বলেন, ‘ভোট শেষে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে গণনা না করেই উপজেলা পরিষদে নিয়ে যেতে লাগেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্টেট্র আসিফ আহম্মেদ। সে সময় আমার কর্মী-সমর্থকরা কেন্দ্রেই ভোট গণনা করতে বলেন। কিন্তু এরপরেও ম্যাজিস্ট্রেট ব্যালট উপজেলা পরিষদে নিয়ে যেতে পথ ধরেন।
‘এ সময় আমার কর্মী-সমর্থকরা বাধা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি করেন। তাদের গুলিতে চারজন মারা যান। ওই চারজনই আমার কর্মী সমর্থক ছিলেন।’
এর আগে দুপুরে ভোট চলাকালে গাবতলীর রামেশ্বরপুর জাইগুনি গ্রামের একটি কেন্দ্রে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে জাকির হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
তিনি টিউবওয়েল প্রতীকের ইউপি সদস্য প্রার্থী শাহিদুল ইসলামের সমর্থক ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন ছিলিমপুর মেডিক্যাল ফাঁড়ির উপপরিদর্শক শামিম হোসেন।
শাহিদুল জানান, জাকির তার প্রচারের ভিডিও ইউটিউবে দিতেন। ভোটের সময় নামাজ পড়তে দুপুরে কেন্দ্র থেকে বের হলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে ফুটবল প্রতীকের সদস্য প্রার্থী ফেরদৌস হোসেনের লোকজন।
এ বিষয়ে জানতে ফেরদৌসের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনের বুধবার সহিংসতায় রাত ১০টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে ৬ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচ ধাপে নিহত হয়েছে অন্তত ৪৬ জন।
পঞ্চম ধাপের ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, চলমান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোটে সহিংসতা ও মৃত্যুর দায় প্রার্থীদের।