খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ চার ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ছাড়া আরও ৪০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করা হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান ভূ্ঞা।
যাদের আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে তারা হলেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান, একই বিভাগের রিয়াজ খান নিলয়, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের হাসান আব্দুল কাইয়ুম ও একই বিভাগের মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান ভূ্ঞা জানান, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৯তম সিন্ডিকেট সভায় মোট ৪৪ শিক্ষার্থীকে সাজা দেয়া হয়েছে। আজীবন বহিষ্কারের পাশাপাশি সাতজনকে দুই বছর ও একজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ২২ শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাদের শাস্তি আপতত স্থগিত থাকবে। ভবিষ্যতে তারা কোনো শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে এই শাস্তি কার্যকর হবে।
১০ শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে বলেও জানান রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান ভূ্ঞা।
যাদের দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে তারা হলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মোহা. তাহমিদুল হক ইশরাক, একই বিভাগের মাহমুদল হাসান, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাদমান সাকিব, একই বিভাগের রাগিব আহসান মুন্না, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাহিন মুনতাসির, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মীর জামিউর রহমান ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের রুদ্রনীল সিংহ শুভ।
এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আনিকুর রহমানকে।
গত ৩০ নভেম্বর বিকেলের দিকে কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যু হয়। এর পরই অভিযোগ ওঠে কিছু ছাত্রের লাঞ্ছনা ও অপদস্তের শিকার হয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেলিম। এ-সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই শিক্ষকের স্ত্রী জানান, বাসায় ফেরার পর সেলিম বাথরুমে যান। বের হতে দেরি হওয়ায় তিনি দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন যে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন সেলিম। সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্রের অপমান, অবরুদ্ধ ও মানসিক নির্যাতনে অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনার তদন্তে সব শেষ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত শেষে ৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৪৪ শিক্ষার্থীকে শোকজ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৩ জানুয়ারির মধ্যে তাদের জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
৭৯তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসারে ৭ জানুয়ারি খুলবে বিশ্ববিদ্যালয়। ক্লাস শুরু হবে এর দুদিন পর ৯ জানুয়ারি থেকে।