গাছপালা বেশি থাকায় অনেক আগে থেকেই ‘সবুজ নগরী’ হিসেবে পরিচিত রাজশাহী। এই শহরকে ধীরে ধীরে আরও সবুজ করে তুলছে ছাদবাগান।
ছাদবাগানের একদিকে বাড়ির সৌন্দর্য বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে চাহিদা মেটাচ্ছে সবজি ও ফলের।
তাই রাজশাহীতে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ছাদবাগান। নগরীর আবাসিক এলাকাগুলোর প্রায় অর্ধেক বাড়িতেই এখন ছাদবাগান গড়ে উঠেছে। এই তথ্য স্থানীয় কৃষি বিভাগের।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী নগরীতে ৪ থেকে ৫ বছর আগেও ছাদবাগানের তেমন প্রচলন ছিল না। তবে গত কয়েক বছরে এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
বর্তমানে রাজশাহী নগরীর আবাসিক এলাকার ভবনগুলাতে অসংখ্য ছাদ বাগান গড়ে উঠেছে। এই নগরীর ৫ শতাধিক ছাদবাগান এখন কৃষি বিভাগের তালিকাভুক্ত। এর বাইরে আরও অন্তত ২৫ হাজার বাগান নগরীর ছাদে ছাদে অবস্থান করছে।
নগরীর কাজিহাটা এলাকায় প্রায় ২০ বছর ধরে বাগান করছেন ইসমাইল হোসেন। ২০১৪ সালে সারা দেশের মধ্যে তার বাগান সেরা নির্বাচিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারও পান তিনি।
ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘শখের বসেই আমি বাগান করি। ধীরে ধীরে গাছের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বর্তমানে ছাদে সবজি, ফল, ফুলের গাছ আছে। সব মিলিয়ে বাগানে গাছ আছে প্রায় ৫ হাজার।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাগানে সময় কাটাতেই আমার ভালো লাগে। এ ছাড়াও বাগানের সবজি, টাটকা ফল ইত্যাদিও সংগ্রহ করতে পারি। বাড়িটারও সৌন্দর্য বাড়ছে। এ রকম বাগান রাজশাহী শহরে এখন অনেক।’
ইসমাইল জানান, বর্তমানে বনসাই ও ক্যাকটাস উৎপাদনে সারা দেশের মধ্যে সেরা অবস্থানে আছে রাজশাহী।
রাজশাহীর ভদ্রা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা শফিক আহমেদ বলেন, ‘বাজার থেকে যে সবজি কিনি, তা খেয়ে তৃপ্তি মেটে না। তাই বাসার ছাদে মৌসুমি সবজি চাষ করছি। এতে চাহিদামতো সবজি খেতে পারছি, অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও খরচও কমছে।’
নগরীর সাহেববাজার এলাকার শামীমা আক্তার বলেন, ‘অবসর সময়ে ছাদে গিয়ে নিজের চাষ করা সবজি দেখাশোনা করি। এতে বিকেলের সময়টা কাটে সবুজের সঙ্গে। আর তৃপ্তি সহকারে খেতে পারি সবজিগুলো।’
রাজশাহী মহানগর কৃষি অফিসার ফাহমিদা নাহার বলেন, ‘রাজশাহী শহরে এখন ছাদবাগান বাড়ছে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলোতে বাগান করার প্রবণতা বেশি। প্রায় অর্ধেক বাড়িতেই রয়েছে এমন বাগান।
‘বাগানে সময় কাটানো এবং মৌসুমি সবজির পাশাপাশি ফলও উৎপাদন হয়। এসব বাগানের কার্যক্রম আরও বাড়ানো ও বাগানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি। বাগান মালিকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।’