স্রোতের তোড়ে ভেসে গেছে দুই পাশের সংযোগ সড়ক। এতে হেলে পড়েছে সেতুটি।
তবু জামালপুরের মাদারগঞ্জে একটি খালের ওপর নির্মিত সেতুটির দুই পাশে কাঠের চাটা বসিয়ে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন চলাচল করছেন কয়েক হাজার মানুষ। এতে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সেতুসহ দ্রুত সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, চরপাকেরদহ ইউনিয়নের দিকপাড়া খালের ওপর ২০ বছর আগে এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালে বন্যার পানির তোড়ে সেতুর দুই পাশের মাটি সরে যায়। এতে হেলে পড়ে সেতুটি। জনদুর্ভোগ কমাতে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সেতুটি দিয়ে দুই গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ চলাচল করেন। এই পথেই তাদের পৌর শহরে যাতায়াত করতে হয়। কৃষিপণ্যসহ সব ধরনের শাকসবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয়। বিকল্প সড়ক না থাকায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে সেতুর দুই পাশে কাঠের চাটা বসিয়ে বাধ্য হয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা না ঘটলেও সাইকেল, মোটরসাইকেল ও ভ্যান পারাপারের সময় মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় ফজলুল হক বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে সেতুটি হেলে আছে। তবুও সরকারিভাবে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের আগে ইউনিয়নকে উন্নয়নের রোল মডেল করবে বলে বিভিন্ন আশ্বাস দেন। পরে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায় না। সেতুতে উঠতে কাঠের চাটা বসানো হয়েছে জনগণের চাঁদার টাকায়।’
কৃষক আহম্মেদ আলী, জয়নাল আবেদিন, সারোয়ার হোসেন নামে কয়েকজন জানান, সড়কটি নিচু হওয়ায় বন্যা হলেই অনেক ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। সেতু নির্মাণের সময় সড়ক উঁচু না করেই সড়কের উচ্চতায় নির্মিত হয়েছে। ফলে সেতু হলেও সড়কের ওপর দিয়ে পানি গিয়ে সড়ক ভেঙে যায়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের একজন বলেন, ‘দিনরাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে জমিতে ফসল ফলাতে হয়। এত বছর ধরে জোড়াতালি দিয়ে ধানসহ বিভিন্ন শাকসবজি নিয়ে বাজারে বিক্রি করছি। মাথায় করে নিয়ে বাজারে যেতে হয়৷ আমাদের কত কষ্ট হচ্ছে বলে বুঝানো সম্ভব না।’
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সেতুটি পরিদর্শন করেছি। এটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হবে।’