বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবার সরকারের অনুমোদন ছাড়াই বাড়ছে তেলের দাম

  •    
  • ৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১৯:৩৩

ভোজ্যতেলের উৎপাদক ও বাজারজাতকারী সংগঠনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য হবে লিটারে ১৪৫ টাকা। বোতলজাত সয়াবিনের খুচরা মূল্য পড়বে ১৬৮ টাকা। বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন বিক্রি হবে ৮০০ টাকায়।

আবারও বাড়ছে সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম। এ দফায় খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ৮ টাকা ও খোলা সয়াবিনে বাড়ছে ৯ টাকা। খোলা পাম অয়েলের দাম লিটারে বাড়ানো হচ্ছে ১০ টাকা।

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ার কথা জানিয়ে গত এক বছরে সরকারের অনুমোদন নিয়ে চারবারেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে তেলের দাম। তবে এবার ব্যবসায়ীরা সরকারের অনুমতির ধার ধারছেন না।

ভোজ্যতেলের উৎপাদক ও বাজারজাতকারী সংগঠনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য হবে লিটারে ১৪৫ টাকা। যার মিল গেট মূল্য ১৪২ টাকা এবং পরিবেশক মূল্য হবে লিটারে ১৪৩ টাকা।

একইভাবে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের খুচরা মূল্য পড়বে ১৬৮ টাকা। যার মিল গেট মূল্য হবে ১৫৮ টাকা এবং পরিবেশক মূল্য ১৬২ টাকা।

বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন বিক্রি হবে ৮০০ টাকায়। মিল গেট মূল্য থাকবে ৭৬০ টাকা এবং পরিবেশক মূল্য হবে ৭৮০ টাকা।

এ ছাড়া প্রতি লিটার খোলা পাম অয়েলের খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৯ টাকা। মিল গেটে যার মূল্য ১২৬ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে মূল্য ১২৭ টাকা ধরা হয়েছে।

বর্ধিত এই মূল্য আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনের সচিব মো. নুরুল ইসলাম মোল্লা স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ৮ জানুয়ারি থেকে বর্ধিত দাম কার্যকরের বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।

তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অনুবিভাগ) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, যদি ৮ তারিখ থেকে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তারা কার্যকর করে সেটি সরকার অনুমোদিত হবে না। দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয় এ-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক থেকে। যা এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। ওই বৈঠকেই ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না কমবে তার সিদ্ধান্ত হবে।’

এই মুহূর্তে তেলের দাম বাড়ানোর যৌক্তিক কারণ দেখছেন না এই কর্মকর্তা। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির কাঁচামালের দাম কমতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে রিফাইনাররা কীভাবে নিজেদের মতো করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সেটি আমাদের বোধগম্য নয়।’

ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে সরকারকে একটি প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান সফিকুজ্জামান। বলেন, ‘আমরা সেটা পেয়েছি। এখন এ প্রস্তাব বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন দিয়ে অ্যানালাইসিস করে দেখব।’

গত বছর ১৯ অক্টোবর সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয় প্রতি লিটারে ৭ টাকা। সরকারের অনুমোদন নিয়ে ওই দিন থেকেই বর্তমানে দেশের বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৭৬০ টাকায়। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১৩৬ টাকা এবং পাম অয়েল ১১৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেই দাম বাজারে কার্যকর হওয়ার আগের দিনই বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কাছে পরের ধাপে বর্তমান বাজার দামের তুলনায় প্রতি লিটার সয়াবিনে ১২ টাকা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে রাখা হয়। যা গত ৩ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করার দাবি জানানো হয়।

কিন্তু নানা কারণে উৎপাদকরা ডিসেম্বরে ভোজ্যতেলের বর্ধিত মূল্য কার্যকর থেকে বিরত থাকে। তবে নতুন বছরের শুরুতেই উৎপাদক ও বাজারজাতকারীরা আবারও দাম বৃদ্ধির পক্ষে এককাট্টা হয়। তবে এবার আগের বর্ধিত প্রস্তাব থেকে লিটারে ৪ টাকা ছাড় দিতে চাইছে।

সে অনুযায়ী গত ২ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে লিটারে ৮ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

দাম বাড়ানোর প্রস্তাব সম্পর্কিত চিঠিতে বলা হয়, করোনা মহামারিতে ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনা করে এতদিন দাম বাড়ানো হয়নি। কিন্তু আমদানি মূল্য বিবেচনায় বর্তমান দাম ধরে রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বাজারে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ভারসাম্য ধরে রাখার স্বার্থে প্রস্তাবিত দাম বাজারে কার্যকরের কোনো বিকল্প নেই।

দেশে ভোজ্যতেলের বাজারের বড় অংশীদার হলো সিটি গ্রুপ। তারা বাজারে তীর ব্রান্ডের সয়াবিন সরবরাহ করে। বর্ধিত দাম সম্পর্কে জানতে গ্রুপটির পরিচালক (অর্থ) বিশ্বজিৎ সাহার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সমিতির সচিব নুরুল ইসলাম মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েই তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।‘

যত চিঠিই দেন, আপনারা সরকারের অনুমোদন ছাড়া তো দাম বাড়াতে পারেন না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা কখনও বলিনি তাদের অনুমোদন ছাড়া দাম বাড়াব। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। তারা এখন আমাদের ডাকুক। যেকোনো সময় ডাকতে পারে। আমরা যেতে প্রস্তুত।’

এ বিভাগের আরো খবর