স্ত্রীর অধিকার আদায়ের দাবি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ঠাঁই পাননি বলে অভিযোগ করেছেন স্নাতকোত্তরের ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা নাদিরা আক্তার।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নের মূলজান এলাকায় গত রোববার বিকেলে গিয়ে শ্বশুর আব্দুল করিমের বাড়িতে ওঠেন তিনি। তার স্বামী সাইফুল ইসলাম ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে সিএ পড়ছেন।
দিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখতার উদ্দিন আহম্মেদ রাজা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, নাদিরা আক্তার একই উপজেলার বেতিলার গোপালপুর ভাদুটিয়া এলাকার নাজিমউদ্দীনের মেয়ে।
নাদিরা দাবি করেছেন, কলেজে পড়ার সময় সহপাঠী সাইফুলের সঙ্গে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। পরে ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর ৬ লাখ টাকা দেনমোহরে তারা বিয়ে করেন।
বিয়ের পর প্রায় দুই বছর সাভারের ব্যাংক কলোনীতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেছেন নাদিরা ও সাইফুল।
পড়াশোনার কারণে স্বামী সাইফুল ইসলাম বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে বললেও সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা হন নাদিরা। এ অবস্থায় শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যেতে পীড়াপীড়ি করলে গত ২৪ ডিসেম্বর নাদিরাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে যান সাইফুল। পরদিনই সাভার ফেরেন তারা।
নাদিরার অভিযোগ, সাভার ফেরার পর থেকেই খারাপ ব্যবহার করার পাশাপাশি এক পর্যায়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন সাইফুল।
এ অবস্থায় গত ২ জানুয়ারি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নিজের অধিকার দাবি করেন নাদিরা। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে বাড়িতে উঠতে না দিলে তিনি সাইফুলের মামা সোহবার হোসেনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
নাদিরা আরও জানান, স্কুলে পড়ার সময় ২০১০ সালে পারিবারিকভাবে তার আরেকটি বিয়ে হয়েছিল। ২০১৫ সালে সেই বিয়েবিচ্ছেদ হয়। প্রথমপক্ষে তার ৮ বছরের একটি মেয়েও আছে। আগের সংসার চলাকালেই সাইফুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সাইফুলের মামা সোহবার হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাইফুলের বাবা অসুস্থ হয়ে ঘরবন্দী আর মা ক্যানসারের রোগী। এই কারণে নাদিরাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলায় আমার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছি এবং চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।
চেয়ারম্যান আখতার উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘ওই গৃহবধূকে তার বাবা-মাকে নিয়ে আসতে বলেছি। সাইফুলের বাবা-মা খুব অসুস্থ। তারপরও তাদের ছেলেকেও হাজির করতে বলেছি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে বসে মিমাংসার চেষ্টা করবো।’
এ বিষয়ে স্বামী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে সাইফুলের মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘ছেলে যেহেতু নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেছে, স্ত্রীকে নিয়ে কোথায় থাকবে তা সে-ই ভালো জানে। সাইফুলের জায়গা আমাদের বাড়িতে নাই।’