চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প প্লটের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে প্রকল্পটির ব্যয় ও সময়।
এই বিষয়ে ‘বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল, মিরসরাই-১ম পর্যায়’ প্রকল্পে সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
শেরে-বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত একনেক সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক প্রধান শেখ হাসিনা।
গত বছরের জুনে প্রকল্পটির বাস্তবায়নের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন কাজ শেষ করতে না পারায় দুই বছর মেয়াদের সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে সংশোধিত প্রকল্পে।
একনেক সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের শিল্প প্লট সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে আরও কিছু আনুষঙ্গিক কাজের জন্য এই প্রকল্পের মেয়াদ ও সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৭৫০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনের মাধ্যমে ব্যয় ১ হাজার ৩০২ কোটি ৯১ লাখ টাকা হয়েছে। একই সঙ্গে মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। প্রকল্পটি চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলায় সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বাস্তবায়নকারী সংস্থা বেপজা জানিয়েছে, শিল্প প্লটের সংখ্যা ২৫০টি থেকে বাড়িয়ে ৫৩৯টি করা হয়েছে। এতে ভূমি উন্নয়ন ও অন্যান্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ বেড়েছে। কয়েকটি অঙ্গের ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধির মাধ্যমে সামগ্রিক ব্যয়ও বেড়েছে। প্রকল্পে ফায়ার স্টেশনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, ২টি কারখানা ভবন, ফুটপাত, গাড়ি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, ৩টি আবাসিক ভবন, ১টি মসজিদ ও ১টি মেডিক্যাল সেন্টার নির্মাণসহ কয়েকটি নতুন অঙ্গ সংযোজন করায় বাড়তি ব্যয় হবে।
এ প্রকল্পের উদ্দেশ হচ্ছে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, নতুন প্রযুক্তি স্থানান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি, অগ্রজ ও পশ্চাৎসংযোগ শিল্পকারখানা গড়ে তোলা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব ও দারিদ্র হ্রাস তথা দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা।
চলতি অর্থবছরের এডিপিতে এ প্রকল্পের অনুকূলে ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে এক কোটি ১৫৬ লাখ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন, ৩ লাখ ৬৪ হাজার বর্গমিটার রাস্তা ও ৩৮ হাজার ৭৮৫ বর্গমিটার ফুটপাত নির্মাণ, ৬১ হাজার ২৮৩ মিটার ড্রেন, ৯ হাজার ৩৬৮ মিটার বারবেড ওয়ার ফেন্সিং ও ৪ হাজার ৪৬৫ মিটার সীমানা দেয়াল নির্মাণ, ৩ হাজার ৫১৬ বর্গমিটার অফিসার্স ডরমিটরি ও ২ হাজার ১১৬ বর্গমিটার স্টাফ ডরমিটরি ভবন নির্মাণ।
এই কার্যক্রমে আরও রয়েছে, তিন ধরনের মোট ১৪ হাজার বর্গমিটার আবাসিক ভবন, ৫ হাজার বর্গমিটার ইনভেস্টরস ক্লাব ও ৫ হাজার ৬২১ বর্গমিটার জোন সার্ভিসেস কমপ্লেক্স নির্মাণ, ২ হাজার ৬০৩ বর্গমিটার সিকিউরিটি ও কাস্টমস ভবন (২টি), ৩৭ হাজার ৫৮২ বর্গমিটার কারখানা ভবন নির্মাণ। এছাড়া ২,৪১২ বর্গমিটার মেডিকেল সেন্টার, আনুষঙ্গিক স্থাপনাসহ ফায়ার স্টেশন ভবন নির্মাণ, মেইন গেট, সিকিউরিটি গেট, কাস্টমস গেট নির্মাণ, সিকিউরিটি ওয়াচ টাওয়ার, সিকিউরিটি ব্যারাক, হেলিপ্যাড, বিদ্যুতের সাব স্টেশন নির্মাণ, এক হাজার ৪৪৪টি সড়ক সৌরবাতি স্থাপন, গভীর নলকূপ স্থাপন অনলাইন গ্যাস সরবরাহ লাইন, বর্জ্য শোধনাগার ইত্যাদিও নির্মাণ করা হবে।