এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক ও চালকসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে দায়ী করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে লঞ্চটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত নৌ-মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি।
নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর কাছে সোমবার রাতে এই প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয় বলে মঙ্গলবার জানা গেছে।
প্রতিবেদনে মালিক ও চালক ছাড়াও লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার, সুকানি ও চালকের সহকারীকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘ত্রুটিপূর্ণ ইঞ্জিন থেকেই লঞ্চে আগুন লেগেছে। আর এর জন্য লঞ্চের চার মালিক, দুই ইনচার্জ মাস্টার, সুকানি, দুই ইঞ্জিনচালক ও চালকের সহকারী দায়ী।’
একই সঙ্গে ত্রুটিপূর্ণ থাকার পরও লঞ্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সদরঘাটের সার্ভেয়ার ও ইন্সপেক্টরকেও দায়ী করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সসংক্রান্ত বিধিবিধান লঙ্ঘনের জন্য ইঞ্জিন পরিবর্তন করা ডকইয়ার্ডের মালিককেও দায়ী করা হয়েছে।
নৌ-মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি টিকিট কেটে যাত্রী তোলা ও লঞ্চের রোটেশন প্রথা বাতিলসহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছে।
এ বিষয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি সময় নেয়া হয়েছে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য। সোমবার রাতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি।
‘মালিক, সুকানিসহ যারা ছিলেন, তাদের দুর্বলতার কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। লঞ্চটি নির্মাণের মধ্যেও দুর্বলতা ছিল বলে বলা হয়েছে। মালিক হোক বা যারাই দায়ী হোক, সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এতগুলো মানুষের জন্য যে যানবাহন, সেসব যানবাহনে কেন ইন্স্যুরেন্স নেই, সেটা নিয়ে জবাবদিহির আওতায় আসবেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
‘ইঞ্জিনে সমস্যা ছিল বলে জানা গেছে, এটার জন্য ডকইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ দায়ী। এ জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় নজরদারি করলেও এরা তা মানছে না।’
ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ আগুনে পুড়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
আগুনের কারণ অনুসন্ধানে ২৪ ডিসেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব তোফায়েল ইসলামকে প্রধান করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিবেদন দাখিলে কমিটিকে তিন কর্মদিবস সময় দেয়া হয়, পরে সময় বাড়ানো হয় আরও তিন দিন।