বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সূচক বাড়ল টানা চার দিন, ৮ দিনের ৭ দিন

  •    
  • ৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:২৪

বছর ও সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসে শেষ পর্যন্ত বাজার ইতিবাচক থাকলেও দিনভর ছিল উত্থান পতনের মধ্যে। আগের দুই দিনে ১২৫ পয়েন্ট উত্থানের স্মৃতি নিয়ে এই লেনদেন শুরুর পর ৪০ মিনিটে সূচক পড়ে যায় ২৯ পয়েন্ট। বেলা পৌনে একটা পর্যন্তই বাজার ছিল নেতিবাচক। তবে এরপর শেয়ারগুলো হারানো দর ফিরে পেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সে ১০.৬৯ পয়েন্ট যোগ হয়ে শেষ হয় লেনদেন।

নতুন বছরের প্রথম তিন কর্মদিবসেই পুঁজিবাজারে বাড়ল সূচক। আগের বছরের শেষ দিনেও সূচকে যোগ হয়েছিল পয়েন্ট। সব মিলিয়ে চার কর্মদিবসের এই উত্থানের ঘটনাটি ঘটেছে গত ৭ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর প্রথমবারের মতো।

এ নিয়ে গত আট কর্মদিবসে সূচক বাড়ল সাত দিন। মাঝে এক দিন কমেছিল ৯ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে আট দিনে বাড়ল ২৬৩ পয়েন্ট।

লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমলে গত ১২ ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো টানা দুই দিন এক হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করেছে।

দিন শেষে লেনদেন দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৮২ কোটি ১৮ লাখ ৯১ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১ হাজার ৩১৪ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।

গত সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সংশোধন আর অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পতনের মধ্যে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে টানা এই উত্থান হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে বৈঠক আর সেই বৈঠকের পর এই দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠককে ঘিরে।

বছর ও সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসে শেষ পর্যন্ত বাজার ইতিবাচক থাকলেও দিনভর ছিল উত্থান পতনের মধ্যে। আগের দুই দিনে ১২৫ পয়েন্ট উত্থানের স্মৃতি নিয়ে এই লেনদেন শুরুর পর ৪০ মিনিটে সূচক পড়ে যায় ২৯ পয়েন্ট। বেলা পৌনে একটা পর্যন্তই বাজার ছিল নেতিবাচক। তবে এরপর শেয়ারগুলো হারানো দর ফিরে পেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সে ১০.৬৯ পয়েন্ট যোগ হয়ে শেষ হয় লেনদেন।

সূচকে পয়েন্ট যোগ হলেও বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে।

দিন শেষে বেড়েছে ১৬৭টির দর, কমেছে ১৮০টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩১টির দর।

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক বেড়েছে শেষ বেলায় দর বৃদ্ধিতে

লেনদেনে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে ছিল বিমা খাতের কোম্পানিগুলো। সাধারণ বিমা খাতের ৭৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। আর জীবন বিমা খাতের শতভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে মঙ্গলবার।

ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৭৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। আর কমেছে ২৬ শতাংশ কোম্পানির।

বিবিধ খাতের ৪৬ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। তবে এই খাতের প্রধান কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড দর হারিয়েছে।

ব্যাংক খাতের ২৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এছাড়া প্রকৌশল খাতের ৪২ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৩৪ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের ২৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।

লেনদেনে সেরা ছিল বিবিধ খাত। দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিমা। পরের অবস্থানগুলো ছিল ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্র, ব্যাংক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, প্রকৌশল খাত।

সূচক বাড়াতে ভূমিকা যে যাদের

মঙ্গলবার সূচক বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল লাফার্জ হোলসিমের, যার শেয়ার দর ৩.০৬ শতাংশ বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ২.৮৬ পয়েন্ট।

টেলিকম খাতের গ্রামীণফোনের শেয়ার দর দশমিক ৪ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২.০২ পয়েন্ট।

ওরিয়ন ফার্মা, রেনেটা, পাওয়ার গ্রিড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ও রবির অবদান ছিল ৬.৬৯ পয়েন্ট।

সূচক বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকায় ছিল এই ১০টি কোম্পানি

ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির শেয়ার দর দশমিক ৬৮ শতাংশ বাড়াতে সূচক বেড়েছে ১.০৬ পয়েন্ট। একমি ল্যাবরেটরিজের শেয়ার দর ৩.৫৬ শতাংশ বাড়াতে সূচক বেড়েছে দশমিক ০৭ পয়েন্ট। এসিআইয়ের শেয়ার দর ৩.২৩ শতাংশ বাড়াতে সূচক বেড়েছে দশমিক ৬৩ পয়েন্ট।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি মিলে সূচক বাড়িয়েছে ১৪.১৮ পয়েন্ট।

বিপরীতে সবচেয়ে বেশি সূচক পড়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের দরপতনে। কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ২.৭৪ শতাংশ, সূচক পড়েছে ৪.০৪ পয়েন্ট।

আগের দুই দিন সূচকে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যোগ করা ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানির দর ০.৮৪ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে ৩.১৮ পয়েন্ট।

বিকন ফার্মা, মবিল যমুনা, শাহজিবাজার পাওয়ার, ইউনিক হোটেল, সামিট পাওয়ার, বিএসআরএম লিমিটেড, জিপিএইচ ইস্পাত ও এক্সিম ব্যাংকের দরপতনও সূচকে আরও বেশি পয়েন্ট যোগ হতে দেয়নি।

এই ১০টি কোম্পানি সূচক নিচে টেনে ধরার চেষ্টা করেছে সবচেয়ে বেশি

এই ১০টি কোম্পানি মিলে সূচক কমিয়েছে ১০.৭৭ পয়েন্ট।

দর বৃদ্ধিতে দশ কোম্পানি

মঙ্গলবার লেনদেনে দিনের সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়েছে নয়টি কোম্পানির। এর মধ্যে ১০ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার দর বেড়েছে দুটি কোম্পানির।

এসব কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল জীবন বিমা কোম্পানি।

এর মধ্যে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিটিতে লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার ৫৬২টি শেয়ার।

ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দরও বেড়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পাটির ৬৩ টাকার শেয়ার পৌঁছেছে ৬৯ টাকা ৩০ পয়সায়।

রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ৯.৯৩ শতাংশ। ৬৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে দর এক দিনে হয়েছে ৬৯ টাকা ৭০ পয়সা।

প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ৯০ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৯.৭৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯৯ টাকা ৮০ পয়সা।

শীর্ষে থাকা দুই খাতের মধ্যে বিবিধতে লেনদেন কমেছে, বেড়েছে বিমায়

সান লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৬০ শতাংশ। কোম্পানিটির ৫২ লাখ টাকার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৭৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

বিবিধ খাতের বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের দর ৯.৯১ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের লাভেলো আইসক্রিমের দর ৯.৮৭ শতাংশ বেড়েছে।

শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের দর ২৬ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৯.৮৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২৯ টাকা। পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নতুন বোর্ড পুনর্গঠন করা জাহিনটেক্সের দর ৯.৫৮ শতাংশ বেড়ে ৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে হয়েছে ৮ টাকা।

দশম স্থানে থাকা অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালের দর ৮.৬৯ শতাংশ বেড়ে ২৭ টাকা ৬০ পয়সা থেকে হয়েছে ৩০ টাকা।

আরও তিনটি কোম্পানির দর ৭ শতাংশের বেশি, ৪টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ৫টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১১টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ১১টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ১৪টির দর ২ শতাংশের বেশি, ৪৫টির দর বেড়েছে ১ শতাংশের বেশি।

দর পতনের শীর্ষে যেগুলো

এদিন সবচেয়ে বেশি ৫.৪১ শতাংশ শেয়ার দর কেমেছে আইসিবি এএমসিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। ফান্ডটির ইউনিট প্রতি দর ৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৭ টাকা। ৯৪ লাখ ১৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার ১১২টি ইউনিটি।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দর কমেছে ৫.১১ শতাংশ। ৭৭ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৫৫টি শেয়ার।

এছাড়া সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর ৩.২৭ শতাংশ, হামিদ ফেব্রিক্সের দর কমেছে ৩ শতাংশ।

দুই শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে ২৫টি কোম্পানির। এর মধ্যে হাওয়েল টেক্সটাইলের ২.৯৮ শতাংশ, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির দর ২.৯৫ শতাংশ, ইউনিক হোটেলের দর ২.৮৫ শতাংশ, মুন্নু ফেব্রিক্সের দর কমেছে ২.৮৩ শতাংশ।

দরপতনের তালিকায় ছিল আরও একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড। সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে ২.৭৯ শতাংশ। বেক্সিমকো লিমিটেডের দর কমেছে ২.৭৪ শতাংশ। নূরানী ডাইংয়ের শেয়ার দর কমেছে ২.৫৯ শতাংশ।

বেশিরভাগ খাতেই দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা

লেনদেনে এগিয়ে থাকা ১০ কোম্পানি

দরপতন হলেও সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডের। কোম্পানিটির ১০৬ কোটি টাকার ৬৯ লাখ ১৮ হাজার ১৪২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৬৮ কোটি ৯২ লাখ টাকার ৮২ লাখ ৯৪ হাজার ১০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

ফরচুর সুজের শেয়ারে যোগ হয়েছে ৪০ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০৭ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৮ টাকা ১০ পয়সা। লেনদেন হয়েছে মোট ৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

অ্যাকটিভ ফাইনে লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১২ হাজার ২৯৪টি।

লাভেলো আইসক্রিমে ২৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিসে ২৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, পাওয়ারগ্রিডে ২৮ কোটি ১ লাখ টাকা, সোনালী পেপারে ২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।

ওরিয়ন ফার্মা ও জিএসপি ফাইন্যান্সে যথাক্রমে ২৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ও ২২ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ওরিয়ন ফার্মায় ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৬০৫টি শেয়ার ও জিএসপি ফাইন্যান্সের ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৩৭১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর