বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গফরগাঁওয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা

  •    
  • ৪ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:২০

মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আলম বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী ও তার কর্মীরা বিভিন্ন পথসভায় আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন। এ ছাড়া আমার কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়ায় ভোটাররা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ইউনিয়ন পরিষদে পঞ্চম ধাপের নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। এরশাদের আমলে তার জামাতা এনামুল হক জজ মিয়া সংসদ সদস্য হয়েছেন। এরপর ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের হয়ে টানা তিনবার এমপি হন আলতাফ হোসেন গোলন্দাজ।

২০০৭ সালে তার মৃত্যুর পর ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি হন ক্যাপ্টেন (অব.) গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের ছেলে ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি হন। সে হিসেবে এ আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবেই পরিচিত।

উপজেলার চারটি ইউনিয়নে আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ইউনিয়নগুলোতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে জয়ী করতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের চোখ রাঙাচ্ছেন দলের বিভিন্ন নেতারা।

এদিকে নির্বাচন ঘিরে কয়েক দিন ধরেই কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নানা মন্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। তাই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অন্য প্রার্থীরা।

আওয়ামী লীগ নেতাদের হুমকির ভিডিও ভাইরাল

সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুখী স্কুলের বাজারে নৌকা প্রতীকের পথসভায় বক্তব্য দিতে দেখা যায় গফরগাঁও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এম সালাউদ্দিন পলাশকে।

সভায় ওই যুবলীগ নেতা বলেন, ‘নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আনারস প্রতীকের প্রার্থীকে পেটানো হবে। রাজনীতিতে কোনো ছাড় নাই। ওই প্রার্থীর পক্ষে কেউ কাজ করলে এলাকা (মশাখালী) থেকে তাদেরকেও উৎখাত করা হবে।’

একই সভায় বক্তব্য দেন মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা কামাল মনি।

তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন। আমরাও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। এ ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রের একটিতেও নির্বাচনের দিন তাদের কোনো এজেন্টকে থাকতে দেয়া হবে না।’

এর আগে ৩১ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রসুলপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সনি এলাকায় নির্বাচনি পথসভায় একই ধরনের বক্তব্য দেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আরঙ্গ হেলাল।

তিনি বলেন, ‘১ নম্বর রসুলপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে কেউ যাবেন না। সবাই নৌকায় ভোট দেবেন। আর যদি ভোট না দেন তবুও আমার জয় নিশ্চিত। আমাদেরকে অন্য পথে যেতে বাধ্য করবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের দিন নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী চশমা প্রতীকের মইনুল হক সরকারের পায়ের নিচে মাটি থাকবে না। তাকে পাইলে চশমাটশমা ভাইঙ্গা দিয়াম। আপনাদের বলে দিলাম, নির্বাচন গতবারের মতোই হইবো। আমাদের সাইফুল আলমকে পাস করাতে হবেই।’

এ সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, ১ নম্বর রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হকসহ অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

প্রার্থীদের অভিযোগ

মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী ও তার কর্মীরা বিভিন্ন পথসভায় আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন। এ ছাড়া আমার কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়ায় ভোটাররা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

‘আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে হামলাও করেছে। আমি রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছি। প্রশাসন কঠোর না হলে নৌকার লোকজন প্রকাশ্যে সিল মারবে।’

রসুলপুর ইউনিয়নের নৌকার বিদ্রোহী চশমা প্রতীকের প্রার্থী মইনুল হক সরকার বলেন, ‘অবৈধভাবে নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে নানা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নির্বাচনের দিন সন্ত্রাসী কায়দায় ব্যালট ছিনতাইসহ প্রকাশ্যে সিল মারা হতে পারে। প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তায় নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমার জয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা দেওয়ান মো. সারোয়ার জাহান বলেন, ‘প্রার্থীদের আচরণবিধি সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। অবৈধ উপায়ে কেউ নির্বাচিত হতে পারবে না। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কেউ নির্বাচনি পরিবেশ নষ্ট করতে চাইলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর