শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নওগাঁয় ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। হাসপাতালে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও নার্সদের।
ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে শিশু ও বয়স্কদের বাড়তি যত্ন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দেরি না করে কাছের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিতে হবে রোগীকে।
নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সোমবার গিয়ে দেখা যায়, সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত শিশুরা ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। বেড সংকটের কারণে শিশু ওয়ার্ডের মেঝেতেও অসুস্থদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিন বছরের মেয়ে সাদিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদিগুন গ্রামের সাইদুর হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের ডায়রিয়া হয়েছে। বেড না থাকায় তাকে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।’
সদর উপজেলার বনানীপাড়া মহল্লার মোহন আলী বলেন, ‘নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত আমার ১৬ মাস বয়সী মেয়ে তানজিলাকে রোববার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করি। তবে শিশু ওয়ার্ডে বেড পাইনি। যার কারণে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এই ঠান্ডার মধ্যে মেঝেতে শুয়ে সে আরও কষ্ট পাচ্ছে।’
সদর উপজেলার চুনিয়াগাড়ী গ্রামের মাহবুব আলম বলেন, ‘আমার দুই বছরের ছেলের জ্বর হয়েছে। তিন দিন থেকে ভর্তি আছে শিশু ওয়ার্ডে। ডাক্তাররা বলছেন, ঠান্ডাজনিত কারণে জ্বর হয়েছে। প্রতিদিনই এখানে অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে।’
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারহানা আক্তার বলেন, ‘রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকায় অনেক শিশুকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এমনকি এক বেডে ২-৩ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ২৫টি বেডের বিপরীতে ৪০ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। তাদের সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।’
নওগাঁ সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক উজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন ডায়রিয়া এবং ১৫ জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে।’
স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওষুধের সরবরাহ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রোগীর চাপ সামাল দিতে চিকিৎসক ও নার্সরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’
নওগাঁর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন মঞ্জুর-এ মোর্শেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গেল কয়েক দিনে চার শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু। শিশুদের যাতে ঠান্ডা না লাগে, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
‘হাত-পায়ে মোজা পরাতে হবে। আবার ঘামে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।’