নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় আনারস প্রতীকের প্রার্থীকে পেটানো হবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন গফরগাঁও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এম সালাউদ্দিন পলাশ।
সোমবার পলাশের এমন হুমকিসংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচারে নেমে মুখী স্কুলের বাজারে নৌকা প্রতীকের পথসভায় ওই হুমকি দেন যুবলীগের এই নেতা।
ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘রাজনীতিতে কোনো ছাড় নাই। আনারস প্রতীকের প্রার্থীকে যেখানে পাওয়া যাবে চিপ্পালায়াম (গলাটিপে ধরা)…
‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে যতদিন বেচে থাকব আপোষ করব না। আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আলম একজন মোনাফেক। তার থেকে আপনারা সাবধান থাকবেন। এই প্রার্থীর পক্ষে কেউ কাজ করলে এলাকা (মশাখালী) থেকে তাদেরকেও উৎখাত করা হবে।’
মশাখালী ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা কামাল মনিও ওই পথসভায় বক্তব্য দেন।
নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থীও হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন। আমরাও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। এ ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রের একটিতেও নির্বাচনের দিন কোনও কেন্দ্রে তাদের এজেন্ট রাখতে দেয়া হবে না।’
এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এম সালাউদ্দিন পলাশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এমন বক্তব্য দিতে চাইনি। মুখ ফস্কে এসব কথা চলে এসেছে। আমরা সবাই সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় ভর করে জনগণের ভোটে নৌকা বিজয়ী হবে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা কামাল মনির মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নিউজবাংলার পরিচয় দিয়ে এসএমএস দিলেও সাড়া দেননি তিনি।
আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফেরদৌস আলম বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী ও তার কর্মীরা আমার কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এতে ভোটাররা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আমাকেও প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে, হামলাও করেছে। আমি রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছি। প্রশাসন কঠোর না হলে নির্বাচনে নৌকার লোকজন প্রকাশ্যে সিল মারবে।’
গফরগাঁও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শামছুন্নাহার ভূঁইয়া বলেন, ‘সব প্রার্থীকে আচরণবিধি সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার একই উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সনি এলাকায় নির্বাচনী পথসভায় একই ধরনের বক্তব্য দেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আরঙ্গ হেলাল।
তিনি বলেন, ‘রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে কেউ যাবেন না। সবাই নৌকায় ভোট দিবেন। যদি ভোট না দেন তবুও জয় নিশ্চিত। আমাদেরকে অন্য পথে যেতে বাধ্য করবেন না। ভোটের দিন সকালেই তিনি (নৌকার প্রার্থী) চেয়ারম্যান হবেন। অতএব নিজের ভোট বিফলে ফেলবেন না, নৌকার প্রার্থী চেয়ারম্যান হবেই।’